দক্ষিণের জেলাগুলোতে চিংড়ির দরপতনে ঘের মালিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা
কম দামে স্থানীয় বাজারে চিংড়ি বিক্রি করেছেন। জেলাগুলো হচ্ছে সাতক্ষীরা,
বাগেরহাট ও খুলনা। আর এ চিংড়ি সস্তা দামে হাট-বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
সাতক্ষীরার এক ঘের মালিক জানান, বিভিন্ন গ্রেডের চিংড়ি গত বছরের চেয়ে অনেক
কম দামে বিক্রি হচ্ছে। গ্রেড-১০ এক কেজি চিংড়ি ৯’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত
বছর দাম ছিল ১২’শ টাকা কেজি। গ্রেড-১২ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ টাকা
থেকে ৭’শ টাকায়। গত বছর দাম ছিল সাড়ে ১১’শ টাকা। গ্রেড-১৫ বিক্রি হচ্ছে ৫৭০
টাকায়। গত বছর দাম ছিল সাড়ে ৯’শ টাকা। গ্রেড-১৮ বিক্রি হচ্ছে ৪২০ টাকা
কেজি। গত বছর দাম ছিল ৮’শ টাকা। গ্রেড-২০ বিক্রি হচ্ছে ৩৪৫-৩৫০ টাকা কেজি।
গত বছর দাম ছিল সাড়ে ৬’শ টাকা। গ্রেড-৩০ বিক্রি হচ্ছে ২৮৫-৩০০ টাকা কেজি।
গত বছর দাম ছিল সাড়ে ৫’শ টাকা। গ্রেড-৪০ বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা। গত বছর
দাম ছিল ৫’শ টাকা। গ্রেড-৬৬ বিক্রি হচ্ছে ২৮৫-৩০০ টাকা কেজি। গত বছর দাম
ছিল ৫’শ টাকা। তিনি জানান, ঘের মালিকেরা ৩০ থেকে ৬৬ গ্রেডের চিংড়ি স্থানীয়
বাজারে কিছু ছাড়ছেন। এসব চিংড়ি বিভিন্ন জেলার হাট-বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
তাদের কাছ থেকে রপ্তানিকারকরা চিংড়ি কিনে থাকেন। রপ্তানিকারকরা বলছেন,
আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা হ্রাসের কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারে দর পড়ে গেছে।
জাতীয় চিংড়ি চাষি সমিতির সভাপতি ডা. আফতাবুজ্জামান বলেন, প্রতি বছর
বাংলাদেশ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা মূল্যের মাছ রপ্তানি হয়ে থাকে। এর মধ্যে
চিংড়ি রপ্তানি হয় ৪ হাজার ২’শ কোটি টাকা থেকে ৪ হাজার ৩’শ কোটি টাকা। এবার
চিংড়ি রপ্তানি আয় কম হবে। ঘের মালিকেরা কিছু চিংড়ি স্থানীয় বাজারে বিক্রি
করছেন। তিনি বলেন, খুলনা অঞ্চলে হেক্টর প্রতি সাড়ে ৩’শ কেজি থেকে ৪’শ কেজি
চিংড়ি উত্পাদন হয়। ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট ও কিছু বাড়তি খাবার দিলে উত্পাদন
সাড়ে ৬’শ কেজি থেকে ৭’শ কেজি পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যায়। ইনটেনসিভ কালচার
পদ্ধতি চাষ করলে হেক্টর প্রতি ফলন ৩ হাজার কেজি থেকে ৫ হাজার কেজি পর্যন্ত
বৃদ্ধি করা যায়।
হঠাত্ করেই ঝিনাইদহ, যশোর, মাগুরা, নড়াইল, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গাসহ
আশ-পাশের জেলাগুলোর মাছ বাজারে সাতক্ষীরা থেকে আসা ঘেরের চিংড়ি মিলছে। দামও
সস্তা। আগে এত সস্তা দামে চিংড়ি মিলত না। শুধু সাতক্ষীরা থেকে নয় অন্যান্য
জেলার ঘেরেও চিংড়ি আসছে মাছের আড়তগুলোতে। তারপর মাছ বিক্রেতারা কিনে
হাট-বাজারে খুচরা বিক্রি করছে।
মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, মাঝারি সাইজের চিংড়ি প্রতি কেজি ৪’শ টাকা থেকে সাড়ে
৪’শ টাকা এবং বড় সাইজের প্রতি কেজি ৬’শ টাকা থেকে ৭’শ টাকা পর্যন্ত দরে
বিক্রি হচ্ছে। এর আগে কখনো ঘেরের চিংড়ি হাট-বাজারে এত সস্তা দামে বিক্রি
হতো না।