পরিবহন মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ এর দাবিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাজধানীতে
প্রবেশ ও বের হওয়ার ১৩টি পয়েন্টে যানজট রোধে ঈদের এক সপ্তাহ আগে-পরে
বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন । মহা সড়কে দুর্ঘটনা রোধে পুলিশের
পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। এজন্য ঈদের তিন দিন আগে ও পরের
তিন দিন জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি চলাচল বন্ধ
থাকবে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য, পচনশীল দ্রব্য, গার্মেন্ট পণ্য,
ওষুধ জ্বালানি বহনকারী যানবাহন এর আওতামুক্ত থাকবে। মঙ্গলবার
ঢাকা-রেঞ্জের পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে পরিবহন
সংশ্লিষ্টদের ঈদ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়। ঢাকা
রেঞ্জের হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ঢাকা
রেঞ্জের হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি এস এম মাহফুজুল হক নূরুজ্জামান বলেন, ঈদের
আগে ও পরে ঢাকা-টাঙ্গাইলসহ গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলোতে যানজট ও অপরাধ রোধে
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। হাইওয়ে পুলিশসহ রেঞ্জ পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
বসানো হবে ওয়াচ টাওয়ার। সিসি ক্যামেরা সচল করা হবে। এছাড়া র্যাব, আনসার
থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সকল বিভাগের সদস্যরা মহাসড়কে কাজ
করবেন। তিনি আরও বলেন, চাই ঈদে নিরাপদে মানুষ ঘরে ফিরুক। এজন্য যা যা করা
দরকার পুলিশের পক্ষ থেকে তাই করা হবে। উল্লেখ্য, গুরুত্বপূর্ণ
মহাসড়কগুলোর মধ্যে ঢাকা-টাঙ্গাইলে ফোর লেন কাজ শুরু এখনও হয়নি। তবে
বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। আর প্রতি বছরই যানজটের কারণে এই মহাসড়কটিতে
অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয় ঘরে ফেরা মানুষদের। বিশেষ করে সড়ক দুর্ঘটনার
কারণে এ মহাসড়কে যানজট হয় সবচেয়ে বেশি। বৈঠকে নূরুজ্জামান আরও জানান,
ঈদের আগে ও পরে ঢাকার এক্সিট পয়েন্টগুলোতে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা নেয়া
হয়েছে। এসব পয়েন্টে যানজট থাকায় যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুর্ভোগ
পোহাতে হয়। তিনি বলেন, ঈদ থেকে ঢাকায় ফেরার সময় সড়ক দুর্ঘটনার মাত্রা
বাড়ে। এর বড় কারণ হলো রাস্তা ফাঁকা থাকা। তাই দুর্ঘটনা রোধেও এবার
মহাসড়কে কাজ করবে পুলিশ। রাখা হবে পর্যাপ্ত রেকার। দ্রুত যেন
দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন সরিয়ে রাস্তা ফাঁকা করা যায়। এছাড়া অযান্ত্রিক
পরিবহন চলাচল বন্ধ ও লক্কর ঝক্কর বাস মহাসড়কে না চালাতে পরিবহন মালিক
শ্রমিকদের প্রতি পুলিশের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
ঈদের সময় নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে কয়েক
দফা প্রস্তাব তুলে ধরা হয় বৈঠকে। এসব প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে,
ঢাকা-জয়দেবপুর চৌরাস্তা, ঢাকা-টঙ্গী, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের
যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর ব্রিজ, সাভার-নবীনগরসহ গুরুত্বপূর্ণ এক্সিট
পয়েন্টগুলোর রাস্তায় যানজট রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া।
যানবাহনের গতি স্বাভাবিক রাখা ও যানজট কমাতে যতটা সম্ভব রাস্তায় ক্রসিং
কমানো। ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কের ফিডার রোড থেকে কোন যানবাহন যেন মহাসড়কে উঠতে
না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া। এছাড়া ঈদ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত
আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহাসড়কে নসিমন, করিমন, ভটভটি,
মহেন্দ্রা ও অটোরিক্সা চলাচল বন্ধ রাখা। যানজট রোধে সকল মহাসড়কে পর্যাপ্ত
রেকারের ব্যবস্থা রাখা। এছাড়াও যানজটের বিষফোঁড়া হিসেবে খ্যাত বাইপাইল
সড়কটি ঈদের সময় ওয়ানওয়ে করা। মহাসড়কের পাশে হাট বাজারসহ অবৈধ দখল উচ্ছেদ
করতে পুলিশের কাছে দাবি জানানো হয়।