দশমিনা প্রতিনিধি: শ্রাবন মাসের শেষের দিকে কৃষক কাটবে আগাম আউশ ধান। এখন ব্যস্ত আমনা ধানের বীজ বপন নিয়ে। অথচ পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা কৃষি অফিস চলতি মৌসুমে আউশ ধানের চাষের মোট তথ্য দিতে পারলেও ছয় ইউনিয়নের তিন ইউনিয়নের যোগফল সম্পূর্ণ করতে পেরেছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। উপজেলা কৃষি অফিসের কাগজে কলমে এবার ৪ হাজার ২’শ ৮০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু সরেজমিনে এ তথ্যেও ছিটেফোটাও মিল নেই। গবাদি পশু-পাখির খাদ্যের যোগানের জন্য বিলের ফাঁকফোকড়ে কিছু কৃষক চাষাবাদ করেছেন আউশ ধানের। উপজেলা সদর থেকে দক্ষিণে পূর্ব লক্ষ্মীপুর গ্রাম। এ গ্রামের প্রতি ঘরে রয়েছেন যেন লক্ষ্মীবধুরা। বাড়ির পাশে উচু জমিতে লক্ষ্মীবধুরা পুইশাক, পাটশাক, কড়লা, ছিচিঙ্গা, পোরল, লাউ ও ঘৃতকোমল মরিচের চাষাবাদ করে স্বামী সংসারে হাল ধরেছেন। উপজেলার সদর বাজারে ওইসব লক্ষ্মীবধুদের উৎপাদিত সবজি বিক্রি হচ্ছে বলে দাবী ওই গ্রামের লাক্ষ্মীবধু সখিনার।
ওই গ্রামের চারদিকে রয়েছে বিশাল বিশাল বিল। বিলগুলোতে বর্ষা আর জোয়ারের পানিতে করছে থৈ থৈ। একটি বিলের মাঝে দু’টুকরো জমিতে আউশ ধানের আবাদ দেখা যায়। একটি জমিতে হারুন মৃধা অপর জমিতে রব মৃধা আউশ ধান চাষাবাদ করেছেন। হারুন মৃধার ছয়টি গরু ও বর মৃধার দেড় শতাধিক হাঁসের খাবারের জন্য এ আউশ ধানের চাষাবাদ বলে তারা জানান। উপজেলার কাটাখালী, সৈয়দ জাফর, গোলখালী, কাউনিয়া, মধ্য দশমিনা, আরজবেগী, গছানী, নিজাবাদ লক্ষ্মীপুর, পশ্চিম লক্ষ্মীপুর, নিজাবাদ গোপালদী, মীরমদন, পূর্ব আউলিয়াপুর, আউলিয়াপুর, যৌতা ও চাদপুরসহ ১৫টি গ্রাম ঘুরে দেখা যায় দু’একজন কৃষক আউশ ধান চাষাবাদ করলেও তাও আবার গবাদী পশু-পাখির খাবারের যোগান দেয়ার জন্য চাষ করেছেন বলে জানান এসব কৃষকরা। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে এ বছর ৪ হাজার ২’শ ৮০ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের চাষাবাদ করেছে কৃষক। এর মধ্যে  রোপা পদ্ধতিতে স্থানীয় জাতের ৯’শ ১০, উফশী জাতের ১ হাজার ১’শ ১০ ও ছিটা পদ্ধতিতে স্থানীয় জাতের ৬’শ ৯০, উফশী জাতের ১ হাজার ৫’শ ৭০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান  চাষাবাদ করার তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে, উপজেলার ছয় ইউনিয়নের ৪’শ ৫০ জন কৃষকদের কৃষি পূর্নবাসনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর সোয়া দুই মেট্রিকটন উফশী আউশ বীজ, ৯ মেট্রিকটন ইউরিয়া, সাড়ে ৪ মেট্রিকটন ডিএপি ও একই পরিমান এমওপি সার বিতরণ করেন। অভিযোগ রয়েছে, কৃষি পূর্নবাসন ও আউশ প্রণোদনার বীজ-সার প্রকৃত কৃষকের মধ্যে বিতরণ না করে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও অকৃষকদের মধ্যে বিতরণ করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসার বনি আমীন খান এ প্রতিনিধিকে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক কৃষকদের তালিকা করা হয়। ওই তালিকার বাহিরে কিছু করার নেই। নিয়ম-অনিয়মের দ্বায়দায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদের, কৃষি অফিসের নয়।
 
Top