নবম
শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের দায়ে ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করায় পাল্টা মিথ্যা
মামলায় জড়িয়ে ধর্ষিতার পরিবারকে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কুমিল্লার
নাঙ্গলকোট উপজেলার মৌকরা ইউনিয়নে এক কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর পাল্টা
মিথ্যা মামলা দায়ের করে ধর্ষকের স্ত্রী।
ওই
মামলায় গত বৃহস্পতিবার রাতে ধর্ষিতা কিশোরীর বাবাকে পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়।
স্থানীয়
সূত্র জানায়, গত ৬ মার্চ ওই ইউনিয়নের নবম শ্রেণির ছাত্রীকে ঘরে রেখে কুমিল্লায় ডাক্তার
দেখাতে যান তার বাবা ও মা। তারা ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে আসে। তাদের অনুপস্থিতির সুযোগ কাজে
লাগিয়ে পাশের বাড়ির আবদুস সাত্তার কোম্পানির ছেলে একাধিক মাদক মামলার আসামি আবুল কালাম
মামুন ওই কিশোরীকে রান্নাঘরে একা পেয়ে মুখ চেপে ধরে ঘরের পেছনের বাগানে নিয়ে ধর্ষণ
করে। একপর্যায়ে মেয়েটি অচেতন হয়ে গেলে মামুন পালিয়ে যায়।
এরপর
বাবা-মা বাড়িতে ফিরে ওই শিক্ষার্থীকে বাগানে অচেতন অবস্থায় খুঁজে পায়। এ ঘটনা জানাজানি
হলে প্রভাবশালী ধর্ষকের পরিবার ছয় দিন ধরে নিজ ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখে কিশোরীর পরিবারকে।
মামুনের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে সাহস করেনি গ্রামবাসী।
পরবর্তীতে
এক রাতে পালিয়ে গিয়ে কুমিল্লার আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের
করেন কিশোরী ধর্ষিতা। মামুন ওই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে এসে মামলা তুলে নেয়ার
জন্য ধর্ষিতার পরিবারকে হুমকি ধমকি দেয়।
কিন্তু
কিশোরীর বাবা অনঢ় থাকায় ধর্ষক মামুন নিম্ন আদালতে হাজির হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বখাটের স্ত্রী নুরুন নাহার আক্তার নুপুর বাদী হয়ে কুমিল্লার আদালতে
নির্যাতিতার বাবাকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের
করেন। ওই মামলায় নিপীড়িত কিশোরীর বাবাকে পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়।
কিশোরীর
মা জানান, মামলা তুলে নেয়ার জন্য ধর্ষক পরিবারের লোকজন আমাদের নানা ধরনের হুমকি-ধমকি
দেয়। কিন্তু আমরা অনঢ় থাকায় বখাটে মামুনের স্ত্রী বাদী হয়ে একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে
আমাদের হয়রানি করছে।
তবে
বখাটের বাবা কাজী আবদুস সাত্তার কোম্পানি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।
এ
বিষয়ে নাঙ্গলকোট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আশ্রাফুল ইসলাম জানান, কিশোরীর বাবার বিরুদ্ধে
আদালতের পরোয়ানা থাকায় তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষণ মামলার ফাইনাল
রিপোর্ট দেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
সূত্র:
দৈনিক যুগান্তর