চিকিৎসকের ভুল অস্ত্রোপাচারে শিশুছাত্রী মৃত্যু, বেঁচেফেরা অন্যরা দূর্ভোগে, সীমাহীন অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মৃণাল কান্তি রায় কিডনি নষ্ট হওয়া রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই আন্দাজ নির্ভর অ্যাপেন্ডিসাইটিসের অপারেশনের কথা বলে অস্ত্রোপাচার করায় ৯জুন উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের গয়জুদ্দিন হাওলাদারের মেয়ে শাহ-কেরামতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণি পড়–য়া মেধাবী ছাত্রী লামিয়ার মৃত্যু হয়। পেটব্যথা নিয়ে ২ জুন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. ইমাম হোসেন কর্তৃক ভর্তি হয়ে চিকিৎসারত লামিয়াকে ৩ জুন সকালে অস্ত্রোপাচার করেন ডা. মৃণাল। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ইমাম হোসেনর অনুমতি না নেয়ায় ডা. মৃণালের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করার গুরুত্বর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ডা. মৃণালের প্রাইভেট চিকিৎসা নিতে এসে অস্ত্রোপাচার ঘটনায় উপজেলার সদর গ্রামের সাজেদা বেগম, আদমপুর গ্রামের রেক্সনা, হাজিরহাট গ্রামের ইমা আক্তারসহ প্রায় ১ ডজন রোগী অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশনের নামে পঙ্গুত্ব বরণের অপেক্ষা করছে। এসব রোগীরা চরম বথ্যা কমাতে পায়ু পথে নিয়মিত ডুষ ব্যবহার করছেন। এদের মধ্যে সচ্ছল পরিবারের রোগীরা উন্নত চিকিৎসা গ্রহণ করছেন বলেও নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। এদিকে, লামিয়ার মৃত্যু ঘটনার পর থেকে ডা. মৃণাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনুপস্থিত থাকলেও ১২ জুন বিকালে থেকে ছুটি দেখিয়ে ১৬ জুন মঙ্গলবার কর্মস্থলে ফিরে এসে তার অস্ত্রোপাচারকৃত অপচিকিৎসারবলি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসারত রোগীদের সাংবাদিক ঝামেলা রয়েছে বলে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। অপচিকিৎসায় মৃত্যু ছাত্রীর ঘটনা ধামাচাপা দিতে আ’লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী দিয়ে লামিয়ার স্বজনদের হুমকি-ধমকী অব্যাহত রেখেছে।
অপরদিকে, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রোগীদের নি¤œমানের খাদ্য সরবারহ করার সুযোগ করে দিয়ে ডা. মৃণালের বিরুদ্ধে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান থেকে মাসোয়ারা ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তৃণমূল জনগনের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় চলমান ইপিআই কর্মসূচীর নি¤œঅর্জণ চরাঞ্চলে ডাব্লিউএইচও কর্তৃক প্রতি তিনমাসের বরাদ্দের ৫৪ হাজার টাকা ভুয়া প্রকল্পের কাগজপত্র তৈরি করে সমূদয় আত্মসাৎ করছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
এছাড়াও উন্নয়ন সংস্থা জিএভিআই এর অর্থায়নে ইপিআই কর্মসূচীতে উপজেলার রণগোপালদি, আলীপুর, বেতাগী-সানকিপুর, দশমিনা ও বহরমপুরসহ ৫টি ইউনিয়নে বিজ্ঞপ্তিহীন ৮জন সেচ্ছাসেবক নিয়োগে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গৌতম চন্দ্র রায়ের ভগ্নিপতি ডা. মৃণাল কান্তি রায় আত্মীয়করণ ও উৎকোচ বানিজ্যনীতি অনুসারণের অভিযোগে জড়িয়ে পরেছেন। ইপিআই কার্যক্রমের অর্থ ছিটেফোটা ভাগবাটোয়ারা করে সমূদয় ডা. মুণাল আত্মসাৎ করায় সরকারের কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্র পূরণ না হওয়াসহ জনগণ চরম ভোগান্তিতে রয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানায়। এ ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মৃণাল কান্তি রায় বলেন, এসব বিষয়ে বক্তব্যে চেয়ে লিখিত আবেদন করলে বক্তব্য দেয়া হবে।