জ্বালানি বাঁচায় খরচ কমায় স্বাস্থ্য রাখে ভালো, ঘরে ঘরে তাই বন্ধু চুলা জ্বালো’- সেস্নাগানকে সামনে রেখে এরই মধ্যে দেশের পাঁচ লাখ গ্রাহকের ঘরে পৌঁছে দেয়া হয়েছে বন্ধু চুলা। ৫০ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয়ী চুলা পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে জার্মান উন্নয়ন সংস্থা জিআইজেড। বাংলাদেশ বিজ্ঞান শিল্প গবেষণা পরিষদ ১৯৮০ সালে উন্নত চুলা উদ্ভাবন করে। ২০০৬ সাল থেকে জার্মান উন্নয়ন সংস্থা জিআইজেড চুলা আরও ব্যবহার উপযোগী করে বন্ধু চুলা নামে দেশের ঘরে ঘরে পৌছে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে। ২০২১ সালের মধ্যে কোটি পরিবারকে ব্যবহার করার জন্য দেয়া হবে চুলা। সরকার সে লক্ষ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে। ভিজিএফ কার্ডধারী দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ ভর্তুকিতে দেয়া হবে বন্ধু চুলা। মে মাসে আরও সাড়ে আট লাখ বন্ধু চুলা তৈরি করা হবে।
বন্ধু চুলা প্রোগ্রামকে টেকসই করার লক্ষ্যে ২০১২ সালে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট পরিবেশ অধিদফতরের সহায়তায় জিআইজেড বন্ধু চুলার বাজার উন্নয়ন উদ্যোগ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করে। ২০২১ সালের মধ্যে ঘরে ঘরে বন্ধু চুলা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে সংগঠনটি।
পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক বন্ধু চুলা প্রজেক্ট ডিরেক্টর সারওয়ার ইমতিয়াজ হাশমী জানান, চুলা তৈরির জন্য সারা দেশে হাজারের বেশি উদ্যোক্তা নিয়োগ করা হয়েছে। প্রত্যেক উদ্যোক্তাকে হাজার টাকা করে অনুদানও দেয়া হয়েছে। উদ্যোক্তাদের বন্ধু চুলা তৈরির কলাকৌশল হাতে-কলমে শিখিয়ে দেয়া হয়েছে।
বর্তমানে বাজারে হাজার ২০০ থেকে হাজার ৪০০ টাকায় চুলা পাওয়া যায়।  ভিজিএফ কার্ডধারীদের জন্য ৫০০ টাকা, সাধারণ মানুষের জন্য ২৫০ টাকা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৭০০ টাকা করে প্রতিটি চুলায় ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে। নির্দিষ্ট এলাকায় সরকার অনুমোদিত উদ্যোক্তারা গ্রাহকের বাড়িতে গিয়ে চুলা স্থাপন করে দিচ্ছেন। এলাকাভিত্তিতে চুলার মূল্যের তারতম্য আছে।
গবেষকদের হিসাবে, ২০১৩ সালেই রান্নাঘরের ধোঁয়াজনিত কারণে হাঁপানি রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ২৫ লাখ। এতে ৫০ হাজার নারী শিশু মৃত্যুবরণ করে। এদেশে প্রচলিত চুলায় বছরে প্রায় ১৫০ কোটি মণ জ্বলানি ব্যবহার করা হয়, এর মধ্যে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ জ্বালানি কাজে লাগে।
বন্ধু চুলা কী?
বন্ধু চুলাএকটি উন্নত চুলা। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তৈরি। ছাঁকনি, চিমনি এবং টুপি চুলার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ছাঁকনির ওপর জ্বালানি পোড়ানো হয়। ধোঁয়া চিমনি দিয়ে ঘরের বাইরে চলে যায়। বন্ধু চুলায় কোনো ঝিকা না থাকায় আগুনের তাপ বেশি কাজে লাগে। ফলে অল্প জ্বালানিতে তাড়াতাড়ি রান্না হয়।
বন্ধু চুলার সুবিধা
* জ্বালানি খরচ অর্ধেক কমিয়ে আনে।
* রান্নাঘর ধোঁয়া দূষণমুক্ত রাখে।
* চোখ জ্বালা, হাঁপানি, মাথাব্যথা ক্যান্সারের মতো রোগের ঝুঁকি অনেক কমায়।
* রান্নাঘর পরিচ্ছন্ন, কালি ঝুলমুক্ত থাকে।
* অগ্নিজনিত দুর্ঘটনার সম্ভাবনা কমায়।
* গ্রিন হাউস ইফেক্ট কমাতে সাহায্য করে।
- শওকত রেজা : এপ্রিল ২৯, ২০১৪
 
Top