সাইদুর সাইদ, দশমিনা থেকে : উন্নয়ন খাতে ৪৩ লাখ টাকা ফেরৎ যাওয়ায় পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার প্রায় ৫শতাধিক শ্রমিক ও সিপিসিরা বিপাকে পরেছে। শ্রমিকরা শ্রমের টাকা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। শ্রমিকদেও ন্যায্য পারিশ্রমিক পরিশোধ করতে সিপিসিরা হন্য হয়ে ঘুওে বেড়াচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে।
একাধিক সূত্র জানায়, ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় শর্তসাপেক্ষে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচীর আওতায় উপজেলার ১১টি প্রকল্পের বিপরীতে ৫৫ লাখ ২০ হাজার টাকা বিশেষ উপ-বরাদ্দ প্রদান করা হয়। দূর্যোগ-ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ঢাকা’র উপ-পরিচালক (কাবিখা-১) মো: আব্দুল জলিল মোজাহারী কর্তৃক ২৩ জুন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি বরাদ্দপত্র প্রেরণ করে। ওই বরাদ্ধপত্র মোতাবেক ২৪ জুন জেলা প্রশাসকের পক্ষে জেলা ত্রাণ ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ নুরুজ্জামান স্বাক্ষরিত বরাদ্দপত্র দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে প্রেরণ করেন। বরাদ্দপত্রে ১১টি প্রকল্পের অনুকূলে ওই অর্থ বরাদ্দের তালিকা প্রদান কওে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নে প্রকল্প কমিটির সিপিসিরা উঠে পওে লাগেন। ১১ প্রকল্পের সিপিসিরা মাত্র ৬দিন যথারীতি প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করার জন্য ৫ শতাধিক শ্রমিক দিয়ে দিনভর কাজ সম্পন্ন কওে শতকরা ৯৫ভাগ কাজ সম্পন্ন করেন। ওই সমাপ্ত করার পরও সংশ্লিষ্ট দপ্তর কতৃপক্ষ টাকা ফেরৎ পাঠান। এতে শ্রমিকদেও টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সিপিসিরা বিপাকে পরেন। অপর দিকে, শ্রমের টাকা না পেয়ে শ্রমিকরা অধাহাওে অনাহাওে জীবন যাপন করছে।
ভুক্তভোগী মো: আনিচ জোমাদ্দার জানান, উপজেলার সদর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের ডিসি রাস্তা হতে ললিত মন্ডলের বাড়ীর পশ্চিম পার্শ্বের ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তা পূণঃনির্মান প্রকল্পের সভাপতি (সিপিসি প্রকল্প-৫) হিসেবে মাটির কাজ করাই। এ প্রকল্পের অনূকুলে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্ধ করা হয়েছে। ওই বরাদ্ধেও প্রায় শতকরা ৯৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। শ্রমিকদেও দিয়ে চুক্তিতে দিনভর করা করানো হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকরা এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে সীমাহীন পরিশ্রম করেছে। তিনি আরো জানান, শ্রমিক দিয়ে দিনভর কাজ করিয়ে শতকরা ৯৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন করেও সমূদয় অর্থ না পেয়ে বিপাকে আছি।
প্রকল্পের মধ্যে ১০টি প্রকল্পের শ্রমিক সর্দাররা জানান, মাটি কাটা শ্রমিক কাসেম মৃধা, মজিবর মৃধা, আবুল হোসেন, লালু মোল্লা, লাল গাজী, অজিত খা, নাসির ও দেলোয়ার বিশ্বাস বলেন, দিনরাত কাজ করে শ্রমের টাকা পাই নাই। একসাথে বেশি টাকা পাব বলে ধার-কর্জ করেছি। সেই টাকা কিভাবে দিব এবং সামনে ঈদ ছেলে-মেয়েদের ভাল পোষাক দেয়া লাগবে সেই চিন্তায় রাতে ঘুম হয়না। এদিকে, খাইয়া না খাইয়া আছেন বলে এসব প্রকল্পের শ্রমিকরা জানান।
সদর ইউপি চেয়ারম্যান এড. ইকবাল মাহমুদ লিটন জানান, যেখানে ১০টি প্রকল্পর কাজের শতকরা ৯৫ ভাগ শেষ হয়েছে, সেখানে শ্রমিকরা শ্রমের টাকা পায়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অনুরোধ করেছি প্রকল্পগুলো ঘুরে দেখেন। কিন্তু উনি না দেখে ১১টি প্রকল্পের শতকরা ৮০ ভাগ অর্থাৎ ৪৩ লাখ টাকা ফেরৎ দিয়েছে। বিল ছাড় দেয়ার জন্য এমপির নির্দেশও উপেক্ষা করেছে ইউএনও আজহারুল ইসলাম।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রাজিব বিশ্বাসের মুঠোফোনে বারবার কল করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ইউএনও আজহারুল ইসলাম জানান, কাবিখা, কাবিটা কাজের ৪ কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করার নিয়ম। ২৪-৩০জুন পর্যন্ত ১ কিস্তি পরিশোধ করেছি। বিধির বাহিরে টাকা পরিশোধ করা যায়না।