দশমিনা:
শিক্ষা
অসচেতন, কুসংষ্কার ও ধর্মান্ধ বেড়াজালে
অধিকাংশ মানুষ আবদ্ধ বলে
জনসংখ্যা হু হু করে
বেড়েই চলছে। স্বাধীনতার উত্তরকাল
এক নম্বর সমস্যাটি জনসংখ্যা।
জন্ম সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে পরিবার
পরিকল্পনা দপ্তরের মাধ্যমে ‘ছেলে হোক মেয়ে
হোক, একটি সন্তান যথেষ্ট’
কার্যক্রম শুরু করে। সরকার
এ্ই শ্লোগানটি বাস্তবায়নে এত পরিকল্পনা, এত
আয়োজন, এত অর্থ ব্যয়।
তবুও জনসংখ্যা বেড়েই চলছে। পরিবার
পরিকল্পনা পদ্ধতি গৃহিতার হার
বাড়লেও কমছেনা প্রজনন হার।
আর এই এক নম্বার
সমস্যাটি যাদেরকে দিয়ে সমাধান করা
হচ্ছে তারা কি সচেতন
এবং পরিকল্পিত। এ বিষয়ে চরাঞ্চল
বেষ্টিত উপকূলীয় পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা পরিবার
পরিকল্পনা অফিসের কর্তব্যরতদের ওপর
অনুসন্ধান চালানো হয়। অনুসন্ধানে
দেখা যায়, উপজেলা পরিবার
পরিকল্পনা অফিসের কর্তব্যরতদের অধিকাংশ
ঢাউস ফ্যামেলি। সন্তান সংখ্যা কেউ
কেউ ছাড়িয়ে গেছে ৬
কোটায়। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা
অফিসার থেকে শুরু করে
মাঠ পর্যায়ে মোট ৭৮ জন
কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ থাকলেও রয়েছে
৫৭ জন। কর্তব্যরতদের মধ্যে
৬ সন্তান ১ জনের,
৪ সন্তান ৪ জনের,
৩ সন্তান ১৩ জনের,
২ সন্তান ১৬ জনের
ও ১ সন্তান রয়েছে
১৬ জনের। অবশিষ্টদের মধ্যে
৪ জন সদ্যবিবাহিত, ২
জন নিঃসন্তান ও ২ জন
অবিবাহিত। সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা
যায়, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে মোট
দম্পতির সংখ্যা ২৭ হাজার
৫০৪ জন। স্থায়ী পদ্ধতি
এনএসবি লক্ষ্য ১৫০ জন,
অর্জন ৮১ জন। অর্জিত
হয়নি ৬৯ জন। টিউবেকটমি লক্ষ্য ১৮৬ জন,
অর্জন মাত্র ১০ জন।
অর্জিত হয়নি ১৭৬ জন।
আইওডি লক্ষ্য ৪৬৮ জন,
অর্জন ২১৭ জন। অর্জিত
হয়নি ২৫১ জন। তবে
৩ মাস মেয়াদী ইনজেকশন
গ্রহণে যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে
বলে মাঠ সংশ্লিষ্টরা জানান।
ইনজেকশনের লক্ষ্য ২ হাজার
৪৮৪ জন, অর্জন ২
হাজার ৭’শ জন।
অতিরিক্ত অর্জিত ২১৬ জন।
খাবার বড়ি সুখীর লক্ষ্য
৩ হাজার ২০৪ জন,
অর্জন ৪ হাজার ৭৫০
জন। অতিরিক্ত অর্জিত ১ হাজার
৫৪৬ জন। রাজা কনডম
লক্ষ্য ১ হাজার ৩২
জন, অর্জন ২২৪ জন।
অর্জিত হয়নি ৮০৮ জন।
নি¤েœ দু’এর
অধিত সন্তান নেয়া সংশ্লিষ্টদের
পদ ও কর্মস্থলসহ ছকের
মাধ্যমে তুলে ধরা হল:
১. ডা. ফিরোজ আলম,
এসএসিএমও, রণগোপালদী মা ও শিশু
পরিবার কল্যান কেন্দ্র, সন্তান সংখ্যা-৩,
২. হাসিনা বেগম, পরিবার কল্যান সহকারী, রণগোপালদী মা ও শিশু
পরিবার কল্যান কেন্দ্র, সন্তান সংখ্যা-৩,
৩. রিজিয়া বেগম, পরিবার কল্যান সহকারী, আলীপুরা মা
ও শিশু পরিবার কল্যান
কেন্দ্র, সন্তান সংখ্যা-৩,
৪. ফজিলাতুনেছা,
পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা, দশমিনা
মা ও শিশু পরিবার
কল্যান কেন্দ্র, সন্তান সংখ্যা-৩,
৫. হোসনেয়ারা,
পরিবার কল্যান সহকারী, দশমিনা
মা ও শিশু পরিবার
কল্যান কেন্দ্র, সন্তান সংখ্যা-৩,
৬. খাদিজা
বেগম, পরিবার
কল্যান সহকারী, দশমিনা মা ও শিশু
পরিবার কল্যান কেন্দ্র, সন্তান
সংখ্যা-৩,
৭. মোঃ
মোসলেম, এমএলএসএস, দশমিনা
মা ও শিশু পরিবার
কল্যান কেন্দ্র, সন্তান সংখ্যা- ৩,
৮. মোঃ
দেলোয়ার হোসেন, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, বেতাগী-সানকিপুর মা ও শিশু
পরিবার কল্যান কেন্দ্র, সন্তান সংখ্যা- ৩,
৯. ইরানি
বেগম, পরিবার
কল্যান সহকারী, বেতাগী-সানকিপুর মা ও শিশু
পরিবার কল্যান কেন্দ্র, সন্তান সংখ্যা-৩,
১০. হোসনেয়ারা
মুকুলী, পরিবার
কল্যান সহকারী, বেতাগী-সানকিপুর মা ও শিশু
পরিবার কল্যান কেন্দ্র, সন্তান সংখ্যা- ৩,
১১. ডা.
রাশিদা খানম, এসএসিএমও, বহরমপুর
মা ও শিশু পরিবার
কল্যান কেন্দ্র, সন্তান সংখ্যা- ৪,
১২. নাজমুন
নাহার, পরিবার
পরিকল্পনা পরিদর্শিকা, বহরমপুর
মা ও শিশু পরিবার
কল্যান কেন্দ্র,সন্তান সংখ্যা- ৬,
১৩. শাহিদা সুলতানা,পরিবার কল্যান
সহকারী, বহরমপুর
মা ও শিশু পরিবার
কল্যান কেন্দ্র, সন্তান সংখ্যা- ৪,
১৪. ডা.
হারুন অর রশিদ, এসএসিএমও, বাঁশবাড়িয়া
মা ও শিশু পরিবার
কল্যান কেন্দ্র, সন্তান সংখ্যা- ৪,
১৫. ছালেহা বেগম, আয়া, বাঁশবাড়িয়া
মা ও শিশু পরিবার
কল্যান কেন্দ্র, সন্তান
সংখ্যা-৪,
১৬. মাহমুদা বেগম, পরিবার
কল্যান সহকারী,বাঁশবাড়িয়া
মা ও শিশু পরিবার
কল্যান কেন্দ্র, সন্তান সংখ্যা- ৩।
উপজেলার
বাঁশবাড়িয়া মা ও শিশু
পরিবার কল্যান কেন্দ্রের পরিবার
পরিকল্পনা পরিদর্শক কাজী মোঃ মাহাবুব
বলেন, এনএসবি ও টিউবেকটমি
বর্তমানে লক্ষ্য অর্জন করা
বড় কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কতিপয়
মাওলানারা ফতোয়া দেন এনএসবি
ও টিউবেকটমিকারীদেও মৃত্যুর পরে জানাজা পড়া
গুনাহ। এ কারনে ক্লাইন্ড
সংগ্রহ দূরুহ হয়ে পরেছে।
দুমকি
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব
বিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ইফতেখার আলমের সাথে কথা
বলেন এ প্রতিনিধি। কিভাবে
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা যায়? তার
মতামত জানতে চাইলে, তিনি
বলেন, জনসংখ্যা রোধে বড় বাধা
ধর্মান্ধতা। এ জন্য সরকারকে
মসজিদের ঈমাম, মুয়াজ্জিনের মাধ্যমে
প্রচার চালাতে হবে। সংশ্লিষ্ট
মাঠ কর্মীদের বাড়ি বাড়ি সচেতনতামূলক
সভা করা, মেম্বার চেয়ারম্যানদের
ভূমিকা থাকা ও সরকারী
সকল বিভাগের কর্মরতদের অধিক সন্তান নেয়াদের
কঠোর হস্তে দমন করার
বিধান করলে পরিবার পরিকল্পনার
শতভাগ বাস্তবায়ন করা সম্ভাব।
এছাড়া
জনসংখ্যা উপরে সার্ভে করা
বিডিএইচএস ২০১১ ও ফার্টিলিটি
২০১৩ সালের সার্ভে উল্লেখ
করেন পরিবার পরিকল্পনা ক্ষেত্রে
তেমন কোন অগ্রগতি নেই।
২০১৪ সালে বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক
এন্ড হেলথ সার্ভে উল্লেখ
করেন, পরিবার পরিকল্পনার ১৮টি
সূচকের মধ্যে ৮টি অগ্রগতি
হয়েছে, ৮টি অপরিবর্তিত রয়েছে
ও ২টিতে নেতিবাচক পর্যায়
রয়েছে।
দশমিনা
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা
(অঃদাঃ) মোঃ শফিকুল ইসলাম
এর মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করার
চেষ্টা করলেও তিনি রিসিভ
করেননি।