মোঃ সাফায়েত হোসেন: পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় গতকাল রবিবার বেলা ১১টায় এক সন্তান সম্ভবা নব বধুকে শালিস বৈঠক করে তালাক অনুষ্ঠানে স্থানীয় ইউপি সদস্য চৌকিদারসহ ৮জনের বিরুদ্ধে উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা দক্ষিণ দাসপাড়া গ্রামের ইদ্রিস হাওলাদারের ছেলে বিয়ের দু’মাস ১৯দিন পর গতকাল সন্তান সম্ভবা নববধুকে গ্রাম্য শালিস বৈঠক করে তালাক দেয়ার অনুষ্ঠান করে। ওই শালিস বৈঠকে নববধু লাভলী বেগমের স্বার্থ রক্ষা না করেই স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ হেলাল উদ্দিন হাওলাদার, গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) দুলাল হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান এড. মোঃ শাখাওয়াত হোসেনের কথিত প্রতিনিধি আবুল কাসেম রাঢ়ী ১০ হাজার টাকা প্রকাশ্যে উৎকোচ গ্রহণ করে। এছাড়াও ৩০ হাজার টাকা লাভলী বেগমকে গ্রহণ করে তালাক রেজিষ্টারে সই করতে হুকুম দেয় ওই শালিসগণ। এ সময় ১ মাস ১৯ দিন পূর্বে রাজধানী ঢাকায় ৫০ হাজার টাকা ধার্য্য করে নিকাহ রেজিষ্ট্রি  হয়েছে এবং বর্তমানে নিজেকে সন্তান সম্ভবা বলে শালিসগণকে জানায় লাভলী বেগম।  কিন্তু মোঃ হেলাল উদ্দিন হাওলাদার, দুলাল হোসেন, আবুল কাসেম রাঢ়ী, শাহআলম রাঢ়ী, আলম হাওলাদার, কেএম মিজানুর রহমান, ফারুক হাওলাদার ও তপু হাওলাদারসহ ৮জন শালিস নববধুর কথা আমলে না নিয়ে রেজিষ্টার কাজী মাওলানা শহিদুল ইসলামকে কাজ সম্পাদনের নির্দেশ দেন। স্থানীয় সাংবাদিকদের চ্যালেঞ্জের মূখে কাজী তালাক রেজিষ্ট্রি না করে স্থান ত্যাগ করেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৩ মাস পূর্বে জাকির হোসেন হাওলাদার ১০ বছর পূর্বের বিবাহিত স্ত্রী শাম্মিকে মৌখিক তালাক দেয়। তালাকের পর জাকিরের প্রথম স্ত্রী দু’সন্তানের জননী শাম্মি বেগম স্বামীর বাড়ি ত্যাগ করে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এদিকে, জাকির হোসেনকে অবিবাহিত বলে পাত্রি খোঁজাখুজি করে বোন শাহিনুর বেগম ও দুলাভাই মোঃ সোহরাব হোসেন । মৌখিক তালাকের আনুষ্ঠানিকতা শেষ না করেই এক সপ্তাহ পরে বরগুনা জেলার মহীপুর উপজেলার রানী পুকুর গ্রামের আবদুল আজীজ মৃধা ও খাদিজা বেগম দম্পত্তির তালাক প্রাপ্তা কন্যা ও এক সন্তানের জননী লাভলী বেগমের সাথে জাকির হাওলাদারকে রাজধানী ঢাকায় কলমা ও ৫০ হাজার টাকা ধার্য করে নিকাহ রেজিষ্ট্রি করায় বোন-দুলাভাই। দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে ঘর-সংসার করার খবর পেয়ে প্রথম স্ত্রীর পরিবারের লোকজন জাকির হাওলাদারকে ফুসলিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেয়াসহ প্রথম স্ত্রীকে নিয়ে পূণরায় ঘর-সংসার করার সন্ধি করে। সুযোগ সন্ধানী জাকির হোসেন ব্যবসার কথা বলে দ্বিতীয় স্ত্রী লাইজু বেগমকে তার বাবার বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা আনতে জোর করে অথবা সেচ্ছায় তালাক দিয়ে বাবার বাড়িতে যাওয়ার কথা বলেন। এতে লাইজু বেগম রাজি না হলে শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন। ১ মাস ৫ দিনের অমানুষিক নির্যাতনের এক পর্যায় লাইজু বেগম সেচ্ছায় তালাক দিতে রাজি হলে গতকাল রবিবার ওই শালিস বৈঠকের আয়োজন করে জাকির হাওলাদার। এ বিষয়ে দশমিনা থানা ওসি মোঃ শাহবুদ্দিন বলেন, এ ধরণের অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 
 
Top