চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার মির্জাখিল শরীফের অনুসারী ফরিদপুরের বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলার ১৫ গ্রামে কয়েক শত মানুষ শুক্রবার সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদের নামাজ আদায় করেছে। এসব মানুষ সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে রোজা রাখা শুরু করে এবং একদিন আগে ঈদ পালন করে। বোয়ালমারী উপজেলার কাটাগড়, মাইট কুমরা, গঙ্গানন্দপুর, সুর্যোগ, সহস্রাইল, ভুলবাড়িয়া, রাখালতলি, দুর্গাপুর, তেলজুড়ি, বন্ডপাশাসহ দশ গ্রামে পাশের আলফাডাঙ্গা উপজেলার শুকুর হাটা, বেজি ডাঙ্গা, ইছাপাশা, মিঠাপুর, কুসুমদিয়ার প্রায় শতাধিক পরিবারের কয়েক শত মানুষ ঈদ উদযাপন করেছে।
 
সুরেশর মতলম্বী সম্প্রদায় সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় আগামীকাল শুক্রবার সাপলেজা ইউনিয়নের ভাইজোড়া, কচুবাড়িয়া, খেতাছিড়া, দক্ষিণ সাপলেজা ও ঝাটিবুনিয়া এ ৫ গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার ঈদ পালন করবে। ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য ওইসব গ্রামের ঈদগাহ গুলো সাজানো হয়েছে। মীর্জা খীল দরবার শরীফে অনুসারী দিনাজপুর জেলার সদর উপজেলাসহ চারটি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শুক্রবার ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। কাহারোল উপজেলার ১৭ টি গ্রামের মানুষ ঈদ উদযাপন করছেন। এছাড়াও বিরল ও চিরিরবন্দরে
কয়েকটি গ্রামেও ঈদ উদযাপনের খবর পাওয়া গেছে।
 
ভোলা জেলার পাঁচ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ১৪টি গ্রামের প্রায় তিন হাজার লোক শুক্রবার ঈদ উদযাপন করছেন। সুরেশ্বর পীর ও সাতকানিয়া পীর মাওলানা মোহাম্মদ মোকলেসুর রহমানের অনুসারীরা পৃথকভাবে ভোলা সদর, বোরহানউদ্দিন, লালমোহন, চরফ্যাশন ও তজুমদ্দিন উপজেলায় পালন করে।
 
সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকায় উদযাপিত হয় ঈদুল আজহা। শুক্রবার সকাল ১০ টায় শাহ সুফি মমতাজিয়া হেজফ খানা ও এতিমখানা মাদ্রাসায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
 
ঢাকার কেরানীগঞ্জ, সাভার, ডেমরা,টঙ্গী,গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও বন্দর এলাকা থেকে হযরত হানাফি মতবাদের মুসল্লিরা এ জামাতে অংশ নেয়। নামাজ শেষে আল্লার সস্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি দেয়া হয়।
 
সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের চার শতাধিক মুসলমান শুক্রবার পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করছেন। সকাল সাড়ে ৮টায় কায়েমপুর আমবাগানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের জামাতে ধোবড়া, কায়েমপুর, কানসাট, সন্নাসীপাড়া, শাহবাজপুরসহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক পুরুষ ও নারী একসাথে ঈদের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে পশু কোরবানি দেয়া হয়।
 
এছাড়াও একই উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের চক হরিপুরেও প্রায় দুই শতাধিক মুসুল্লি আজ ঈদ উদযাপন করছেন। সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে বিগত কয়েক বছরের ন্যায় এবারও শেরপুরে কয়েকটি গ্রামে পৃথকভাবে পালন করা হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। শেরপুর সদরের চনখারচর, মুন্সীরচর, বামনের চর, ঝিনাইগাতি উপজেলার বনগাঁও চতল ও নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নীর মধ্যপাড়াসহ পাঁচটি স্থানে পৃথকভাবে শুক্রবার পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে। এসব স্থানে অল্প সংখ্যক মুসল্লি পবিত্র ঈদের নামাজ আদায় করেন। প্রত্যেকটি ঈদের জামাতে ৩০-৫০ জনের মতো মুসল্লি অংশ নেন। ঈদের নামাজের বড় জামাতটি অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৮টায় নালিতাবাড়ীর নন্নী মধ্যপাড়ায়। দিনাজপুর সদর উপজেলাসহ কয়েকটি উপজেলায় সৌদি আবরের সাথে মিল রেখে শুক্রবার পবিত্র ইদুল আজহা পালিত হচ্ছে। সকাল ৮ টায় দিনাজপুর শহরের স্থানীয় ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গনে কয়েকশ' মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন।
এছাড়াও দিনাজপুরের চিরিরবন্দর, কাহারোল, বীরগজ্ঞ ও বিরল উপজেলাসহ প্রায় ৪০টি গ্রামের মুসল্লিরা শুক্রবারই পবিত্র ইদুল আজহার নামাজ আদায় করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বদরপুর দরবার শরিফের অনুসারী সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সাথে মিল রেখে সোমবার পটুয়াখালীর ২৫ টি গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযপিত হচ্ছে। প্রতি বছর জেলার বিভিন্ন উপজেলার অন্তত ২৫ টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ একদিন আগেই ঈদ ও কোরবানী পালন করে থাকেন। জেলার সদর উপজেলার বড় বিঘাই, ছোট বিঘাই, মরিচবুনিয়া, বদরপুর, কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী, গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি সহ আন্তত ২৫ টি গ্রামে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়।
 
এই প্রথম রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদুল ফিতরের ঈদের নামাজ আদায় করেছে তিনটি গ্রামের তিন শতাধিক মুসল্লি। সকাল ৭টার দিকে অস্কারপুর আম বাগানে অনুষ্ঠিত ঈদের জামায়াতে ইমামতি করেন উজ্জল হোসেন নামের এক ইমাম। চারঘাট অস্কারপুর, থানাপাড়া ও গোরশহরপুর গ্রামের ঈদের নামাজ আদায় করা মুসল্লিরা জানিয়েছে সৌদি আরবকে অনুসরণ করে তারা রোজা ও ঈদ পালন করেছেন।
এর আগে ভোর থেকে মুসল্লিরা অস্কারপুর আম বাগানে আসতে শুরু করে। থানাপাড়া ও গোরশহরপুর গ্রামের মুসল্লিরা নসিমনযোগে সেখানে আসে। স্থানীয়রা জানায়, এর আগে রোববার ওই তিনটি গ্রামের মুসল্লিদের একটি অংশ সৌদি আরবকে অনুসরণ করে সরদহ ডিগ্রী কলেজ মাঠে ঈদের জামায়াত করার ঘোষণা দেয়। কিন্তু স্থানীয়রা তা প্রতিরোধের ঘোষণা দিলে এই নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। শেষ পর্যন্ত স্থানীয়দের হুমকি ও পুলিশী বাধায় আয়োজকরা পিছু হটে এবং অস্কারপুর আম বাগানে ঈদের নামাজ আদায় করে। তবে সরদহ ডিগ্রী কলেজ মাঠে পূর্ব ঘোষিত ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত না হবার পেছনে নিজের অভ্যান্তরিন সমস্যার কথা জানিয়েছেন আয়োজকরা।
 
এসব এলাকায় ঈদের জামাত ও ঈদের আনন্দ নির্বিঘ্ন করতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
 
মাদারীপুরের ২৫টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ঈদ-উল-ফিতর উদযাপন করছেন। পাঁচখোলা ইউনিয়নের তাল্লুক গ্রামের চরকালিকাপুর প্রাইমারি স্কুল মাঠে সুরেশ্বর দায়রা শরীফের প্রতিষ্ঠাতা পীর শাহ সুরেশ্বরীর অনুসারীরা সকাল ৯টায় ঈদের নামাজ আদায় করেন। নামাজে ইমামতি করেন শাহ সুরেশ্বরীর খাদেম মাওলানা আবুল হাসেম।
 
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ-উল-ফিতরের নামাজ পড়লেন দেড় শতাধিক নারী ও পুরুষ। নামাজে ইমামতি করেন আলহাজ্ব আব্দুল মাওফিক চৌধুরীসহ (পীর সাহেব উজান্ডি)। মৌলভীবাজার শহরের সার্কিট হাউস এলাকার আহমেদ শাবিস্তা নামক বাসার ছাদে সকাল সাড়ে ৬টায় ঈদের এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে আলহাজ্ব আব্দুল মাওফিক চৌধুরী (পীর সাহেব উজান্ডি) দ্য রিপোর্টকে জানান, গত ৬ বছর ধরে তিনি শহরের সার্কিট হাউস এলাকায় তার বাসায় পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের নামাজ আদায় করে আসছেন।
 
এদিকে জেলা শহরের আরও ৭/৮টি স্থানসহ কুলাউড়া, বড়লেখা ও শ্রীমঙ্গলেও অনেক মুসল্লী সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপনের খবর পাওয়া গেছে। ঝিনাইদহের হরিনাকুণ্ডু পৌর এলাকার ঋষিপাড়ায় ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৮টায় এ জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলার সিথলী, ভালকী, পায়রাডাঙ্গা, বৈঠা পাড়া, ঋষি পাড়া ও সিংড়ে গ্রামসহ ৭টি গ্রামের প্রায় অর্ধশত মুসল্লিরা প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ঈদের নামাজ আদায় করেন।
 
শেরপুর সদরের উত্তর ও দক্ষিণ চরখারচর, মুন্সীরচর, বামনের চর, ঝিনাইগাতি উপজেলার বনগাঁও চতল, নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী মধ্যপাড়া ও চিনামারাসহ ৮টি স্থানে পৃথকভাবে আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হচ্ছে। সকাল সাড়ে ৭ টা থেকে ৮ টার মধ্যে পৃথক এসব স্থানে মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করেন। প্রত্যেকটি ঈদের জামাতে দেড় থেকে দুইশ জনের মতো মুসল্লী অংশ নেন। ঈদের নামাজের বড় জামাত দুটি অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৭টায় বনগাঁও চতল ও নন্নী মধ্যপাড়ায়। এ ছাড়াও নন্নী মধ্যপাড়ায় পুরুষদের পাশাপাশি পর্দার আড়ালে নারীরাও অংশ নেন।
 
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার এলাহাবাদ দরবার শরীফের অনুসারী বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলার পরিবার আগাম ঈদ উদযাপন করছে। এর ধারাবাহিকতায় সকাল ১০টায় বরিশাল নগরীর সাগরদীর তাজকাঠী ও টিয়াখালী চৌধুরী বাড়িতে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
 
এ ছাড়া জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার খানপুরায় জাহাঙ্গীর সিকদারের বাড়ি, ওলানকাঠী এলাকার সরোয়ার খলিফার বাড়ি, কেদারপুরের মান্নান হাওলাদারের বাড়ি ও মাধবপাশার আমীর দুয়ারী বাড়ির জামে মসজিদে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
 
রামগঞ্জ উপজেলার তিন গ্রামের মুসলমানরা ঈদ উদযাপন করছেন। উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের নওগাঁ গ্রাম, জয়পুরা গ্রাম ও বিগা গ্রামের প্রায় ২ হাজার বাসিন্দা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে এ ঈদ পালন করছেন। নওগাঁ গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রহমান জানান, পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে ঈদুল ফিতরের (শাওয়াল মাস) চাঁদ দেখা গেলে সে চাঁদের সঙ্গে মিল রেখে তারা ঈদ পালন করেন। সৌদি আরবে ঈদের চাঁদ দেখা গেছে, সে হিসেবে তারা সকালে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন।
 
তারা ইসলামের হানাফি মাযহাফের অনুসারী। পূর্ব পুরুষদের আমল থেকে তারা এ নিয়ম পালন করে আসছেন। ফলে সরকারি নিয়মে এ তিন গ্রামের বাসিন্দারা ঈদ পালন করছেন না।
 
চাঁদপুরের ৫০ গ্রামে প্রায় ৩০ হাজার মুসল্লি সোমবার ঈদ উল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। ওই গ্রামের মুসল্লিরা ইসলামের চার তরিকার মধ্যে হানাফি মাযহাবের অনুসারী। এ নিয়মের কয়েক অনুসারী বলেন, 'পৃথিবীর যে প্রান্তেই চাঁদ উঠুক আমরা খবর পেলে সেদিন থেকেই রোজা রাখতে শুরু করি। সে মোতাবেক ঈদ পালন করি।'
 
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করা গ্রামগুলো হলো- হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলিপুর, বলাখাল, মনিহার, বেলাচা, হাকনি, সেনাগাঁও, প্রতাপপুর, দক্ষিণ বলাখাল, বাসারা; ফরিদগঞ্জ উপজেলার উভারামপুর, উটতলী, মুন্সীরহাট, মূলপাড়া, বদরপুর, আইটপাড়া, সুরঙ্গচর, বালিথুবা, কাইতাড়া, নুরপুর, সাচনমেঘ, ষোল্লা, হাঁসা, গোবিন্দপুর, চরদুখিয়া, মতলবের দশানী, মোহনপুর, পাঁচানী এবং শাহরাস্তি উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ও কচুয়া উজানির কয়েকটি গ্রাম। এ ছাড়া জেলার দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি গ্রামে একইভাবে রোজা রাখা হয়। চট্টগ্রামে অর্ধশতাধিক গ্রামে ঈদ আজ। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একই দিনে এ ঈদ উদযাপিত হবে। এ গ্রামগুলোর বাসিন্দারা চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার মির্জারখীল দরবার শরীফ ও চন্দনাইশের কাঞ্চননগর শাহসুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারী।
 
যে গ্রামগুলোয় ঈদ উদযাপিত হয়েছে, সেগুলো হলো- সাতকানিয়ার বাজালিয়া, ফকিরপাড়া, কেওচিয়া, মির্জারখীল, শাহপুর, ঢেমশা, চরতী, গুয়াজরপাড়া, লোহাগাড়ার বড়হাতিয়া, আমিরাবাদ, চুনতি, পুটিবিলা, উত্তর সুখছড়ি, আধুনগর, চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চননগর, পশ্চিম এলাহাবাদ, উত্তর কাঞ্চননগর আব্বাসপাড়া, পূর্ব এলাহাবাদ, মাইজপাড়া, ছৈয়দাবাদ, হাশিমপুর খুনিয়া পাড়া, পৌরসভার দক্ষিণ হরল্লা, সাতবাড়িয়া, বরমা, বাইনজুরি, কেশুয়া, কানাইমাদারি, দক্ষিণ হাশিমপুর বড়পাড়া, ধোপাছড়ি, পটিয়ার হাইদগাঁও, মংলার পাড়া, বাহুলি, কালারপুল, খরনা, সিয়ানপাড়া, বাথুয়া, রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান, কুয়াইশ, মদুনাঘাট, বোয়ালখালির চরণদ্বীপ, খরণদ্বীপ, বাঁশখালির গুনাগুরী, জলদী মাইশ্যাপাড়া, কালীপুর, আনোয়ারার তৈলারদ্বীপ, বুরুমছড়া, বান্দরবান,আলীকদম, সীতাকুণ্ডের রহমতপাড়া, বাঁশবাড়িয়া, বাড়বকুণ্ড।
 
শরীয়তপুর জেলার ৪ উপজেলার ৩০টি গ্রামে আজ ঈদুল ফিতর পালন করবে। অন্তত ১০ হাজার ভক্ত ও মুরিদান এই ঈদে অংশগ্রহণ করবে। সুরেশ্বর দরবার শরীফে সকাল সাড়ে ১০টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সুরেশ্বর দরবার শরীফের গদিনসীন মুত্তাওয়ালী কামাল নূরী বলেন, 'সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে প্রায় শত বছর যাবৎ বাংলাদেশের ১ দিন আগে চাঁদ দেখার দিন সুরেশ্বর পীরের দরবারে সকল ভক্ত ও তাদের মুরিদানরা একই নিয়মে ঈদ উৎসব পালন করে আসছে।' সেই সূত্র ধরে নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর, চণ্ডিপুর, ইছাপাশা, থিরাপাড়া, ঘড়িষার, কদমতলী, নিথিরা, মানাখানা, নশাসন, ভুমখারা, ভোজেশ্বর, জাজিরা উপজেলার কালাইখার কান্দি, মাদবরকান্দি, সদর উপজেলার বাঘিয়া, কোটাপাড়া, বালাখানা, প্রেমতলা, ডোমসার, শৌলপাড়া, ভেদরগঞ্জ উপজেলার লাকার্তা, পাপরাইল ও চরাঞ্চলের ১০টি গ্রামসহ প্রায় ৩০টি গ্রামের অন্তত এক হাজার পরিবারে ১০ হাজারের ও বেশি নারী-পুরুষ সকাল সাড়ে ১০টায় ঈদুল ফিতরের জামাতে অংশগ্রহণ করেন।
 
ভোলার ৫ উপজেলায় ২০টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন। সুরেশ্বর দরবারে পীর, মাইজ ভান্ডারীয়া ও সাতকানিয়া অনুসারীরা পৃথক পৃথকভাবে ভোলা জেলা সদরের ইলিশা, বোরহানউদ্দিনে টগবী, তজুমদ্দিনের শিবপুর, সম্ভুপুর, লালমোহন পৌর এলাকা ও চরফ্যাশনের জিন্নাগর ইউনিয়নে মানুষ ঈদ উযদাপন করে। সকাল ১০টায় জেলার বোরহানউদ্দিনের টগবী ইউনিয়নের মুলাইপত্তন গ্রামে ঈদের বৃহৎ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ৫ শতাধিক মুসল্লি জামাতে শরিক হন।
 
পর্যায়ক্রমে সকাল সাড়ে ৯টায় চৌকিদার বাড়ি, পঞ্চায়েত বাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়াও তজুমদ্দিনের শিবপুর, সম্ভুপুর, লালমোহন পৌর এলাকা ও চরফ্যাশনের জিন্নাগর ইউনিয়নে সকাল ১০টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
 
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় পবিত্র ঈদুর ফিতরের নামাজ আদায় করেছে হানাফি (রা.) মাযহাবের অনুসারীরা। সকাল ১১টায় ফতুল্লার লামাপাড়ায় হযরত শাহ্ সুফী মমতাজিয়া এতিম খানা ও হেফজ খানা মাদ্রাসায় 'জাহাগিরিয়া তরিকার' কয়েকশ অনুসারী এ ঈদের নামাজ আদায় করেন।
 
এদিকে, উলামা পরিষদ বাংলাদেশ নামের সংগঠনের এক বৈঠকে সৌদির সাথে ঈদ পালন রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল  বললেন সিলেটের উলামারা বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্তের বাইরে সৌদির সাথে মিল রেখে রোজা ও ঈদ পালনকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা বলে আখ্যা দিয়েছেন। তারা এই মত ব্যক্ত করে বলেন, যারা এই দেশের রাষ্ট্রীয় ঘোষণার বাইরে অন্যদের সাথে মিল রেখে রোজা ও ঈদ উদযাপন করে তারা বিশৃঙ্খলাকারী। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন উলামারা। উলামা পরিষদ এক বিবৃতিতে জানায়, গত মঙ্গলবার রাত ১১ টায় সিলেট নগরীর বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জামেয়া কাসিমুল উলুম দরগাহ হযরত শাহজালাল (রাহ.) মাদরাসার প্রধান পরিচালক (মুহতামিম) মুফতি মাওলানা আবুল কালাম যাকারিয়ার সভাপতিত্বে উলামা পরিষদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় হযরত ওমর (রাযি.)'র শাসনামলে ২০ রাকাত তারাবি, তিন রাকাত বিতির পড়ার সর্বজনস্বীকৃতি সিদ্ধান্তের বাইরে যারা অবস্থান নিয়েছেন, তাদেরকে 'ধর্মীয় ঐক্য বিনষ্টকারী' আখ্যা দিয়ে তাদের অপতৎপরতা থেকে বেঁচে থাকার জন্য বাংলাদেশের মুসলিমদের প্রতি আহবান জানান। বিবৃতিতে উলামা পরিষদ বলে, নিজ নিজ দেশের চাঁদ দেখার উপর ভিত্তি করে রোজা, ঈদ ইত্যাদি পালনের যুক্তিসঙ্গত নিয়মের বিপরীতে ঐক্যের দুহাই তুলে সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ ও রোজা পালনের প্রবক্তাদের অপতৎপরতা থেকে বেঁচে থাকারও আহŸান জানানো হয়। উলামা পরিষদ বাংলাদেশ মনে করে যে, একই দিনে ঈদ-রোজা পালনে শ্লোগানদানকারীরা মুসলমানের ঐক্য ফাটল সৃষ্টির ইহুদী-খৃষ্টানদের হীন এজান্ডা বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তারা বাংলাদেশের মাটিতে সরকারী ঘোষণার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে একদিন আগে ঈদ পালন করে প্রকারান্তরে সরকারী সিদ্ধান্তের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করছে। যা রাষ্ট্রদ্রহীতার শামীল। তাই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর আবেদন জানান উলামারা। উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি হাফিজ মাওলানা মজদুদ্দীন আহমদ, সহ সভাপতি মাওলানা ক্বারী মুজ্জম্মিল হুসেন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শামছুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াস, অর্থ সম্পাদক মাওলানা হুসাইন আহমদ, সহ অর্থ সম্পাদক মাওলানা সালেহ আহমদ, সহ প্রকাশনা সম্পাদক মুফতী মো. যাকারিয়া, নির্বাহী সদস্য হাফিজ শামছুল ইসলাম, হাফিজ লিয়াকত আহমদ, মাওলানা আব্দুল মতিন নবীগঞ্জী, মাওলানা আব্দুস সালাম, মাওলানা আব্দুশ শহিদ, মাওলানা বদরুল ইসলাম, হাফিজ মাওলানা আব্দুস সামাদ, মাওলানা নূরুল ইসলাম যাকারিয়া, মাওলানা নাজিম উদ্দিন, মাওলানা আব্দুর রহমান, মাওলানা হাফিজ জিয়াউর রহমান, মাওলানা আকবর হোসাইন চৌধুরী, মাওলানা মাহমুদ হুসাইন, মাওলানা শামছুল ইসলাম, মাওলানা হাফিজ আব্দুল কাসিম, মাওলানা ওলী উল¬াহ, মাওলানা জুহুর আলী, মাওলানা হারিস আহমদ, মাওলানা আহমদ হুসাইন, মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম, মাওলানা হাফিজ মঞ্জুর আহমদ, মাওলানা নূরুল হক, মাওলানা হাফিজ মাহমুদুল হাসান, মাওলানা শফিউল আলম, মাওলানা মুহি উদ্দিন, মাওলানা আব্দুর রহমান প্রমুখ।
 
বিবৃতিতে জানানো হয়, আগামী ৯ রমজান (শনিবার) বাদ জোহর নগরীর ৫নং ওয়ার্ডে শাহী ঈদগাহ হাজারীবাগ জামে মসজিদে উলামা পরিষেদের মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এতে আলোচনা করবেন মুফতি আবুল কালাম যাকারিয়া ও হাফিজ মাওলানা যুবায়ের আহমদ আনসারী।
 
Top