বার্লিন, ১৫ জুলাই- জার্মানির নতুন “মেসি” মারিও গোটশে।রীতিমত জার্মানির
 হিরো।মাত্র ২২ বছর বয়সেই বিশ্ব জয়ের নায়ক।তার কারণেই জার্মানরা রাতভর 
উদ্দাম নৃত্যে মেতে ওঠে।অতিরিক্ত সময় তাকে মাঠে নামানোর সময় কোচ তার ওপর 
আস্থা রেখেছিলেন। বলেছিলেন, তুমি দেখিয়ে দাও “যাও দেখাও, মেসির চেয়ে তুমি 
ভাল। তুমি কাপ জেতাতে পারো।”।
আর রাতে ফেসবুকে গোটজের লিখে ফেলা ‘ঈশ্বর, আপনার থেকে এক মিনিট নিচ্ছি। 
না, কিছু চাইব না। শুধু বলব, থ্যাঙ্ক ইউ...থ্যাঙ্ক ইউ...থ্যাঙ্ক 
ইউ!’ফাইনালে একমাত্র গোল দিয়ে জার্মানিকে বিশ্বকাপ উপহার দেয়ার আগেও গোটশে 
জার্মানিতে ছিলো বহুল আলোচিত একটি নাম।ব্যক্তিগত জীবনও তিনি জার্মানিতে 
বহুলচর্চিত।
ফুটবলারদের তাঁর বক্সার ছাড়া কিছুই মনে হয় না, এক বার বলে বসেছিলেন। 
মেসুট ওজিলের আর্সেনাল ‘ডিল’-এর আগে তিনিই ছিলেন জার্মানির সবচেয়ে দামি 
প্লেয়ার। মাত্র আঠারো বছর বয়সে তাঁর প্রতিভার যা হীরকদ্যুতি দেখা গিয়েছিল, 
তাতে জার্মান ফুটবল বুঝে গিয়েছিল ‘মানশাফট’-এর ভবিষ্যৎ নিশ্চিন্তে এঁর হাতে
 তুলে দেওয়া যায়।
ব্যক্তিগত জীবনও বা কম কী? বন্ড গার্ল ইভা গ্রিন এক সময় গোটজের বান্ধবী 
ছিলেন। বছর দুয়েকের প্রেমপর্বের পর এখন দেশের সুপারমডেল অ্যান ক্যাথরিন 
ব্রমেলকে ‘ভবিষ্যতের জার্মানি’-র সঙ্গে ঘুরতে দেখা যায়!
তাঁর ফুটবল-বৃত্তের ভিতর ও বাহির যতই রঙিন হোক, যতই তাঁর ‘চকোলেট বয়’ 
ভাবমূর্তি নিয়ে জল্পনা চলুক মহিলা-সমর্থককুলে, মারিও গোটজে কোথাও গিয়ে একটু
 আলাদা। নইলে বাইশ বছরের জীবনের সেরা দিনে আর মার্কো রয়েসকে মনে পড়িয়ে দেন?
মারাকানায় রবিবার রাতে একটা জার্সি হাতে ঘুরতে দেখা যাচ্ছিল গোটজেকে। 
জার্সিতে বড় বড় করে লেখা রয়েস। পরে ইন্টারভিউয়ে বলেও দেন, “আজকের দিনটা ওর 
জন্য।” চোটের কারণে ব্রাজিল আসা হয়নি রয়েসের। জার্মানিতে বসেই দেখেছেন 
গোটজের তাঁর জার্সি হাতে নিয়ে ঘোরা। দেখে কেঁদে ফেলেছেন। টুইটও করেছেন 
গোটজেকে ‘ভাই’ সম্বোধন করে।
চার বছর আগে বিদেশি কোনও সাংবাদিক জার্মানিতে গেলে প্রথমেই জার্মানি 
ফুটবল সংস্থার লোকজন গোটজেকে দেখিয়ে নাকি বলতেন, ‘ছেলেটাকে দেখুন, ও-ই 
আমাদের সবচেয়ে মারাত্মক প্লেয়ার হতে যাচ্ছে।’ বছরে এক বিলিয়ন ইউরো খরচ করে 
যে ফুটবল-ফ্যাক্টরি চালায় জার্মানি, মারিও গোটজে তার এক নম্বর ‘প্রোডাক্ট’।
 যে জার্মান অ্যাকাডেমি বুন্দেশলিগা ক্লাবদের জন্য কড়া গাইডলাইন তুলে 
দিয়েছিল দেশের ফুটবলে রেনেসাঁ আনতে। যে নির্দেশিকার প্রতিফলন গোটজেকে মাত্র
 আট বছর বয়স থেকে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের ‘সংরক্ষণ’ করা। আর্সেন ওয়েঙ্গারের 
বিশাল অঙ্কের টোপ অগ্রাহ্য করে দেশের প্রতিভাকে দেশে রেখে দেওয়া। মাত্র 
আঠারো বছরেই সিনিয়র টিমে গোটজেকে খেলাতে দু’বার ভাবেনি ডর্টমুন্ড। দু’বার 
তার পর ক্লাবকে বুন্দেশলিগাও দেন গোটজে।
তার পরেও প্রতিভার প্রতি যোগ্য সুবিচার হচ্ছিল না। আহামরি ফর্মে ছিলেন 
না এই মরসুমে, জার্মান চাণক্য জোয়াকিম লো তাঁকে নামাতে পারছিলেন না টমাস 
মুলার-আন্দ্রে শুরলেদের দাপটে। বান্ধবী ব্রমেল ক’দিন আগে এক সাক্ষাৎকারে 
বলে দিয়েছিলেন, গোটজেকে বিয়ে করা তাঁর জীবনের একমাত্র লক্ষ্য নয়। সুপারমডেল
 তো তখন বেশি বিখ্যাত ছিলেন গোটজের চেয়ে।
