আসন্ন
সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। এতদিন
বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীই বিএনপির প্রার্থী হচ্ছেন বলে প্রচারণায় ছিল।
কিন্তু
রাজশাহী ও বরিশাল সিটিতে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা হলেও আটকে যান আরিফ। এর
পর থেকে বিএনপির প্রার্থী নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়। দলীয়
নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
তাহলে
কি বর্তমান মেয়র আরিফকে বাদ দিয়ে নতুন মুখ দিচ্ছে বিএনপি? স্থানীয় বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতার সঙ্গে আলাপ করে দলীয় প্রার্থী পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
এ
ক্ষেত্রে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী সিলেট মহানগর সভাপতি নাসিম হোসাইন, সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল কাইয়ুম জালালী পংকী, সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, সহসভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর মধ্যে একজন দলীয় প্রার্থী হতে পারেন।
প্রথমবারের
মতো দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠেয় সিলেট সিটি নির্বাচনে কার হাতে নিরাপদ ধানের শীষ, তা সোমবার পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারেননি বিএনপির নেতাকর্মীরা। এবার
নির্বাচনী প্রক্রিয়ার শুরু থেকে মেয়র পদে আরিফের বিএনপির দলীয় মনোনয়ন ঠেকাতে একাট্টা দলের অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।
দলের
হাইকমান্ডের কাছে সরকারের সঙ্গে আঁতাতসহ নানা অভিযোগ তুলেছেন মেয়র আরিফের বিরুদ্ধে। ২০১৩
সালের ১৫ জুন আরিফুল হক চৌধুরী সিলেটের মেয়র নির্বাচিত হন। পরের
বছর ২৮ ডিসেম্বর কারাবন্দি হন। সাবেক
অর্থমন্ত্রী এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্রে আসামি করা হয় তাকে।
২০১৫
সালের ৭ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে বহিষ্কার করে। দীর্ঘদিন
কারাগারে থাকার পর ২০১৭ সালের ১২ মার্চে বহিষ্কারাদেশের বিরুদ্ধে আরিফুল হক চৌধুরী হাইকোর্টে রিট করলে বরখাস্তের আদেশ স্থগিত হয়।
এ
আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। প্রধান
বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রিমকোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। গত
বছরের ৬ এপ্রিল স্বপদে মেয়রের কার্যালয়ে যোগ দেন আরিফুল হক চৌধুরী। ৫
বছরের জন্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলেও আরিফের অর্ধেকের চেয়ে বেশি সময় চলে যায় কারাগারে।
মেয়র
নির্বাচিত না হলে স্পর্শকাতর দুটি মামলায় আসামি হয়ে কারা নির্যাতনের শিকার হতো না বলে দলের হাইকমান্ডকে অবহিত করেন আরিফুল হক চৌধুরী। এসব
বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত সিলেটে আরিফেই পাচ্ছেন বিএনপির দলীয় মনোনয়ন- এমন প্রত্যাশায় ছিলেন তার অনুসারীরা।
কিন্তু
রোববার কেন্দ্র থেকে রাজশাহী ও বরিশাল সিটির দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। এ
সময় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রার্থী হিসেবে আরিফের নাম ঘোষণা না করায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন আরিফ অনুসারী নেতাকর্মীরা।
এদিকে
বিএনপি দলীয় প্রার্থী ঘোষণা বিলম্বিত হওয়ায় ভোটের মাঠে প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। দলীয়
প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে এবার মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন আওয়ামী লীগ, তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
সেই
লক্ষ্যে আজ সিলেট জেলা ও মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের যৌথসভা আহ্বান করা হয়েছে। আগামীকাল
(বুধবার) ডাকা হয়েছে মহানগর যুবলীগের বিশেষ সভা।