পৃথিবীতে সব মানবসন্তান পূর্ণতা নিয়ে জন্মায় না। এ যেন সৃষ্টিকর্তার অন্যরকম ভাবনা। তবে অপূর্ণতা নিয়েও এ মানুষগুলো হয়ে ওঠেন বিশ্বসেরা। জেসিকা কক্সও তেমনই একজন।
জেসিকার দু হাত নেই। কিন্তু সঙ্গে আছে অসাধারণ মানসিক শক্তি। জেসিকা মনের শক্তিতেই লিখতে পারেন, টাইপ করতে পারেন, গাড়ি চালাতে পারেন। শুধু তাই নয়, তিনি চুলও আঁচড়ান এবং ফোনও করতে পারেন। প্রশ্ন হচ্ছে, হাত ছাড়া জেসিকা কি করে এতসব কাজ করতে পারেন?
বিস্ময়কর হলেও সত্যি, জেসিকা নিজের দুটি পা দিয়েই করে ফেলেন প্রয়োজনীয় সব কাজ। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজনায় ১৯৮৩ সালে জন্ম নেওয়া জেসিকা একইসঙ্গে নৃত্যশিল্পী এবং তায়কোয়ান্দোতে ব্ল্যাকবেল্ট অর্জন করেন।
অ্যারিজনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জেসিকা মনোবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। পড়াশোনা করতে খুব একটা সমস্যা তার হয়নি। পা দিয়েই বইয়ের পাতা উল্টিয়েছেন। টাইপও করেছেন পা দিয়ে। হিসাব করে দেখা গেছে জেসিকা প্রতি মিনিটে ২৫টি অক্ষর টাইপ করতে পারেন।
জেসিকা গাড়িও চালাতে পারেন। তবে শুরুতে গাড়ি চালানোর লাইসেন্সের জন্য কোন বিধি নিষেধ দেওয়া হয়নি।
গাড়িতো অবশ্য খুব ছোট বিষয়। সবাইকে তাক লাগিয়ে জেসিকা আকাশে বিমান উড়াতে সক্ষম।
জেসিকা হচ্ছেন বিশ্বের প্রথম হাতবিহীন লাইসেন্সপ্রাপ্ত বিমানচালক। তিন বছরের প্রশিক্ষণ শেষে ২০০৮ সালের ১০ অক্টোবর জেসিকা লাইসেন্সপ্রাপ্ত বিমানচালক হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। তিনি ১০ হাজার ফিট উচ্চতায় হালকা বিমান উড়িয়ে প্রশিক্ষকদের অবাক করে দেন।
প্যাডেল ছাড়া বিশেষ প্লেনের নাম ছিল ‘ইরকুপ’। এই প্লেনেই উড়তেন জেসিকা। এ ধরনের বিশেষ প্লেনে রাডার প্যাডেল না থাকায় জেসিকা অবলীলায় দু পা দিয়েই নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন।
জেসিকা বর্তমানে তরুণদের উৎসাহমূলক বক্তা হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি নাম। বিশেষ করে একবার তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমার হাত নেই। তাই বলে আমাকে কেউ কখনও কোনো নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে আটকে রাখতে পারেনি।