আলোর পথের সারথী আমাতুল্লাহ! তাবলীগের পরশে রূপালী পর্দার জগত থেকে আজ যে ভাবে তিনি মাদরাসার চার দেয়ালে আলোচিত মডেল ও চিত্র নায়িকা নাজনিন আক্তার হ্যাপির পরিবর্তন নিয়ে অনেক দিন ধরেই মিডিয়া, অনলাইন, অফলাইনে আলোচনা চলছে। কিন্তু তিনি কতটা বদলেগেছেন এবং কিভাবে? হ্যাপি থেকে আজ যেভাবে আমাতুল্লাহ হলেন। প্রথম দিকে কেবল মাস্তুরাতের (মহীলাদের)সাপ্তাহিক তালিমে আসা যাওয়া ছিল। তার পর বাসার তালিম চালু।এভাবে কয়েকমাস চলার পর তিন দিনের জামাতে। দেখতে দেখতে মাত্র কয়েক মাসে, মাস্তুরাতের দাওয়াতী মেহনত আর তালিম তরবিয়তের ফলে তার পরিবর্তন আর দ্বীনী বুঝ, কল্পনা ও রূপকথার গল্পকেও যেন হার মানায়। অতচবাস্তব এমনি হয়েছেন তিনি। ক্রমশ যে ভাবে নিজেকে সাজিয়েছেন দ্বীনের জন্য, তা আজ আপনার সামনে তার লেখা থেকেই তুলে ধরছি।★"অনেক বড় একটা স্বপ্ন পূরন হতে যাচ্ছেইনশাল্লাহ! আগামী ১ তারিখে তিন দিনেরমাস্তুরাত জামাতে যাব।এটাই প্রথম যাওয়াহবে। আলহামদুলিল্লাহ!এটা অনেক বড় স্বপ্নআমার জন্য। আল্লাহ চাইলে এখন থেকেআমি নিয়মিত মাস্তুরাত জামাতে যাব।আমি যে কত খুশি তা মাপতে পারছি না!আমি সত্যিই মনে করতে পারছি না, আরকোনকিছুতে কোনদিন আমি এত খুশিহয়েছি কি না ! ১ তারিখ না আসা পর্যন্তসময় যেন কাটছেই না,অস্থির হয়ে যাচ্ছি। এযেন মধুর অপেক্ষা!October 30, 2015 at 11:35am★মাত্র তিন দিনে এতকিছু পাবো কল্পনাওকরতে পারিনি।সবই মহান আল্লাহ তায়ালাররহমত।★"আমি নিজেই অবাক হয়ে যাই আমি কি আগের সেই মেয়েটি? কোনদিন কল্পনাও করতেপারিনি যে, আজকের আমি কোনদিন হতেপারবো। আগে ভাবতাম - জীবন তো একটাই সো যা খুশি তাই করা উচিৎ, নতুন নতুন ডিজাইনের অল্প কাপড় দিয়ে তৈরি পোশাক কিনে আলমীরাতে সাজাতে হবে, আর নতুন কোন
মডেলের মোবাইল এলো সেটা তো কিনতেই হবে ,পার্লারে মাসে অন্তত চার বার নাগেলে হবেই না ,বান্ধবীদের সাথে ঘনঘনদামি দামি রেস্টুরেন্টে আড্ডা দেওয়া, কেউনোংরা কথা বললে অন্তত একটা গালিদেওয়া, অনেক জোরে জোরে গান শোনাএগুলোকেই মনে হত জীবনের সব ( আমি না শুধু , সব আধুনিক মেয়েই এ রকমভাবে জীবনকে ভাবে বা এর চেয়ে আরও উন্নতভাবে ) কিন্তু এখন মনে হয়------জীবন একটাই এবং জীবনের এই সময়টাশুধুমাত্র আল্লাহ তায়ালার ইবাদাতের সময়।এখন আমার পছন্দের পোষাক শুধুই বোরখাআর সালোয়ার কামিজ (হিজাবও) এবংকামিজের হাতাটা ফুল হাতা হতে হবে।আমার সখের আই ফোন সিক্স প্লাস চার্জদেওয়ার অবহেলায় অনেক দিন ধরেইনিস্তেজ হয়ে আছে অথচ চালু করার প্রয়োজনবোধ হচ্ছে না। আর পার্লার ? আল্লাহ নিজহাতে যেই রূপ দিয়েছে ,এতে কেন খুশি হতেপারব না?আল্লাহ আমাকে মাসাল্লাহ অনেকসৌন্দর্য দিয়ে বানিয়েছেন তাহলে এতঘসামাজার কি দরকার আছে?বরং ভেতরেরসৌন্দর্য বাড়াতে হবে ইসলামের আলোতে।আর আড্ডা দেওয়া? আড্ডার ছলে থাকলেযদি আমার নামাজ কাযা হয়ে যায়, আমার এতবড় ক্ষতির ভার তো আমাকেই নিতে হবেএবং এর সাজাও আমাকে পেতে হবে। এখনআমাকে কেউ মেরে ফেললেও আমার মুখথেকে গালি কেন, কোন বাজে কথাও বেরকরতে পারবে না । এখন গানও শুনি না,আযানই শুধু মধুর লাগে। 
এবং আযান শুনেযতক্ষন নামাজে না দাড়াব , ততক্ষন খুবঅস্থির লাগে।কোন দুঃখই আমাকে ছুতেপারে না ,সবকিছুতেই আমি আল্লাহতায়ালার রহমত অনুভব করি।জ্বী, এটাই এখনকার আমি! -------এবং আগেরজিবন টা আমার কাছে খুব অচেনা লাগে।।মনে হয় ঐ জাহান্নামী জীবন কখনোই আমারছিল না।গল্পের মত মনে হলেও এটাই বাস্তব।এটাই আমি।november 15, 2015 at 7:00pm ·★আল্লাহর রহমতে আমিআমার নাম পরিবর্তন করেছি, বর্তমান নাম"আমাতুল্লাহ"। এর অর্থ " আল্লাহর দাসী"।ইসলাম ধর্মে নাম অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।আমার নামের ভাল অর্থ না থাকার কারনেইনাম পরিবর্তন করা।আমি চাই এখন থেকেসবাই আমাকে "আমাতুল্লাহ" নামেই জানুক।November 24, 2015 at 7:36pm★মাদরাসাতে এসে অনেক ভাল লাগছে, নতুনপরিবেশ,নতুন সব মানুষ,নতুন জায়গা আলহামদুলিল্লাহ!আমার বাসার ঘরটা এখন থেকে ফাঁকাইথাকবে,ভাইটাকে বেশি মিস করব।তবুও আল্লাহর জন্য কষ্ট করতেই হবে।এখন থেকে আর ফোন ইউজ করতে পারব না।সবার সাথেইযোগাযোগ বন্ধ,আল্লাহর জন্যই ত্যাগের রাস্তায়নেমেছি।সবাই ভাল থাকুন,সবার জন্যই অনেকদোয়া রইল।December 25, 2015 at 9:11pm★আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহমাদরাসাতে আমার অভিজ্ঞতা:দেখতে দেখতে ২৮ দিন পার করে ফেললাম।একেবারে প্রথম দিকে কেমন যেন একটা লাগত! ঠিক কেমন যে লাগতো, সেটা বোঝানোর মত ভাষাগত দক্ষতা আমার নেই।নিজেই আসলে সেই অনূভুতিগুলোর নাম জানি না, প্রথমে অনেক একা লাগতো,অনেক কষ্ট লাগতো। যদিও সাথে সাথেই মনে করতাম আল্লাহর রাজি-খুশির জন্যই তো কষ্ট করতে হবে। আলহামদুলিল্লাহ!বাসায় অনেক কম কথা বলেছি কারণ আমার মধ্যে যাতে মায়ার উদ্রেগ তৈরি না হয়।মায়া খুব খারাপ,ধংসের জন্য যথেষ্ট উপকরণ।আল্লাহর রাস্তায় থাকতে হলে আল্লাহর জন্য কুরবানী ছাড়া দ্বিতীয়কোনো কথা নেই। মাদরাসাতে এখন কারিয়ানাহ (কোরআন সহীহ) করছি আর সঙ্গে আরবী, উর্দু।এটা আগামী রমজান পর্যন্ত তারপর মিজান জামাতে পড়ব। ইনশাআল্লাহ ৬ বছর পর আলেমা হয়ে যাব।আরবী আর উর্দুশিক্ষার বই দেখে তো কান্না চলে আসতো।মনে হতো,হায় আল্লাহ! এসব কিভাবে পড়ব!আলহামদুলিল্লাহ!আল্লাহ সহজ করে দিয়েছেন। মাদরাসাতে সবাই অনেক ভাল।মাশাআল্লাহ!আস্তে আস্তে সবার আদরের পাত্রী হয়ে গেলাম। বেশিরভাগ সময় দাওরা আপুদের ক্লাসে বসে থাকি। অনেক শান্তি লাগে ! কত বড় বড় কিতাব!বুখারী,মুসলীম,তিরমীযি, আবু-দাউদ,কত হাদীস! (হরকত ছাড়া আরবী ভায়ায়)।আমি শুধু এই কিতাব গুলোর বাংলানোট পড়ি আর ভাবি এতকিছু তো জানার বাকি! মাদরাসার বোনেরা মাদরাসার অনেক কাজ করে।আমি নতুন বলে আমাকে কাজ দেয় না।আমি কিন্তু বসে থাকি না নিজে সুযোগ পেলেই রুম ঝাড়ু দেই,বোর্ডিংয়ে তরকারী কাটি,বোনদের সেবা করার চেষ্টা করি শুধুমাত্র আল্লাহর খুশির জন্য।আমি এত কষ্ট করেথাকব,এত কাজ করব কোন কল্পনাকরেছি বলেও মনে হয় না।একমাত্র আল্লাহচেয়েছেন বলেই আমি আল্লাহর রাস্তায় মেহনতকরার সুযোগ পেয়েছি।আলহামদুলিল্লাহ!মাদরাসা ছাড়া এখন আর ভাল লাগে না।এই একটা জায়গাতেই দুনিয়াবী কিছুই স্পর্শ করতে পারে না। আলহামদুলিল্লাহ!(আম্মুর অসুস্থতার জন্য দুই দিনের ছুটি নিয়ে বাসায় এসেছি।আলহামদুলিল্লাহ!)"


সূত্র: http://www.somewhereinblog.net/mobile/blog/Almasrur/30108057
 
Top