সিনেমা
বানানোর কথা বলে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলায় চিত্রনায়িকা সাদিয়া আফরিন বর্তমানে কারাগারে। সম্প্রতি
তার বিরুদ্ধে নতুন করে আরেকটি অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশি
একটি এসকর্ট সার্ভিস প্রোভাইডার সাইটে তার ছবি দেখা যাওয়ায় নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছেন তিনি। যদিও
সেই ছবিতে ছদ্মনাম ‘নিনা’ (বয়স ২৪) ব্যবহার করা হয়েছে। দেশের
কয়েকটি গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশ পায়।
এ
বিষয়ে বিস্তারিত জানতে সেই সাইটে প্রবেশ করলে বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়। সেখানে
সাদিয়ার ছবি দেখা যায় কিন্তু নাম পরিবর্তন করে দেওয়া। তবে
তিনি পুলিশ হেফাজতে থাকায় ছদ্মনামে দেহ ব্যবসায় জড়িত থাকার বিষয়ে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
সাদিয়ার
দেহ ব্যবসায় জড়িত থাকার বিষয়ে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘চলচ্চিত্রের নাম ব্যবহার করে অনেকেই এখন নিজেদের দাম বাড়িয়েছেন। তাদের
মাঝে সাদিয়াও একজন। তিনি
অনৈতিক কাজ করে কিনা তা আমার জানা নেই। তবে
বিভিন্ন আড্ডায় তার এ সকল কাজে সম্পৃক্ত থাকবার কথা বহুবার শুনেছি।’
২০১৫
সালে দুই প্রযোজক আকাশ, রনি ও পরিচালক এম কে জামানের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সাদিয়া আফরিনকে সিনেমা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ‘বিষাক্ত
ইয়াবা’ নামে সিনেমার দুই প্রযোজক ও পরিচালকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছিলেন সাদিয়া নিজেই।
অভিনেত্রী
সাদিয়া আফরিন বিনোদন বিচিত্রা সেরা ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ২০১১ সালে মিডিয়ায় পা রাখেন। মডেলিংয়ের
পাশাপাশি বেশ কিছু সিনেমায় আইটেম গানে কাজ করেন। এছাড়া
বেশকিছু নাটক ও টেলিফিল্মেও কাজ করেছেন সাদিয়া।
উল্লেখ্য,
আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলায় গত বৃহস্পতিবার সাদিয়াকে এবং মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর থানা এলাকা থেকে তার স্বামী বিদ্যুৎ কুমারকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের
বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শারমিন জাহান (লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া সেল)।
শারমিন
জাহান জানান, ২০১৩ সালে মিজানুর রহমান খাঁন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয় সাদিয়ার। পরিচয়ের
সূত্রে সাদিয়া বলে যে, আমার স্বামী বিদ্যুৎ কুমার সাহা ওরফে সৌরভ সিনেমা প্রযোজনা করেন এবং মিজানুর রহমানকে বলে যে আমাদের নির্মিত ছবিতে বিনিয়োগ করলেন ব্যাপক লাভবান হবেন।
তিনি
আরো বলেন, বিশ্বস্ততা ও সিনেমার নানান লাভের দিক দেখিয়ে সাদিয়া ও তার স্বামী তাদের কাছে মিজানুর রহমানকে ৩ কোটি টাকা সিনেমায় বিনিয়োগ করতে প্রলুব্ধ করে। যার
প্রেক্ষিতে মিজানুর রহমান পর্যায়ক্রমে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, বিকাশ ও পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে সর্বমোট ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা তাদের প্রদান করে।
সিআইডির
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শারমিন জাহান বলেন, টাকা দেয়ার বেশ কিছুদিন পার হয়ে যাওয়ার পর তাদের বার বার বলা সত্বেও তারা সিনেমা না বানিয়ে টালবাহানা শুরু করে। এরপর
টাকা ফেরত চাইলে সাদিয়া আফরিন সাফ জানিয়ে দেয় সে টাকা দিতে পারবে না আপনি যা পারেন করেন।
শেষমেষ
কোনো উপায়ান্তর না দেখে মিজানুর রহমান তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজু করে।
এ
মামলাটি সিআইডি অধিগ্রহণ করার পর বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লাহর তত্ত্বাবধানে সিআইডি অর্গানাইজড ক্রাইমের (সিরিয়াস ক্রাইম স্কোয়াড) একটি বিশেষ দল সাদিয়া ও স্বামীকে গ্রেফতার করে।
এই
ঘটনায় গত ২১ মে রাজধানীর মিরপুর থানায় মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ৪২০ ও ৪০৬ ধারায় মামালা দায়ের করেন। মামলাটি
সিআইডিতে হস্তান্তরের পর গত ১২ জুন কথিত চিত্রনায়িকা সাদিয়া আফরিন ও তার স্বামী সৌরভকে গ্রেফতার করা হয়।