প্রস্তাবিত
বাজেটের সাথে জারি হওয়া মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপণের
কয়েকটি শর্ত দেশে মোবাইল হ্যান্ডসেট সংযোজন ও উৎপাদন শিল্পের সাথে সরাসরি
সাংঘর্ষিক বলে দাবি করেছেন মোবাইল ফোন আমদানিকারক সংগঠন বাংলাদেশ মোবাইল
ফোন ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমপিআইএ)। অযৌক্তিক এসব শর্তে
বিনিয়োগকারীরা বিশাল ক্ষতির সম্মুখিন হবে, মোবাইল সংযোজন শিল্প টিকবে না
এবং হাজার হাজার শ্রমিক কর্মসংস্থান হারাবে। এর ফলে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’
স্বপ্ন চিরতরে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মাত্র
গত বছর প্রজ্ঞাপণ জারি করে এ বছরই তার বিপরীত প্রজ্ঞাপণ জারি করে অতিরিক্ত
১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করায় পূর্ণাঙ্গ মোবাইল আমদানির খরচের চাইতে
স্থানীয়ভাবে সংযোজিত মোবাইলের খরচ বেশি পড়বে বলে জানায় বিএমপিআইএ।
শনিবার রাজধানীর স্থানীয় একটি হোটেলে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আশংকার কথা জানানো হয়। সংবাদ
সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া শহীদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক
মেজবাহ উদ্দিন, ট্রানশান হোল্ডিং বাংলাদেশের সিইও রেজওয়ানুল হকসহ অন্যান্য
নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিএমপিআইএ
সভাপতি রুহুল আলম আল মাহবুব বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটের সঙ্গে জারিকৃত মূল্য
সংযোজন কর অব্যাহতি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপণ-১৬৮ এর কয়েকটি শর্ত দেশে মোবাইল
হ্যান্ডসেট সংযোজন ও উৎপাদন শিল্পের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক।
তিনি
বলেন, প্রজ্ঞাপণের শর্ত (ক)-তে বলা হয়েছে, সংযোজন প্রতিষ্ঠান ব্যতীত
উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ইহা প্রযোজ্য হইবে। এই শর্ত অনুযায়ী
শুধুমাত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ভ্যাটের আওতামুক্ত থাকবে, সংযোজনকারী
প্রতিষ্ঠান নয়। অথচ গত অর্থ বছরের বাজেটের সময় জারি করা প্রজ্ঞাপণে সংযোজন
এবং উৎপাদনকারী উভয় প্রতিষ্ঠানকেই ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখা হয়েছিল।
বিএমপিআইএ
সভাপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের
দর্শনে উদ্বুদ্ধ হয়ে এবং গত বছরের প্রজ্ঞাপণ সুবিধার কারণে বেশ কয়েকটি
প্রতিষ্ঠান দ্রুততম সময়ে সংযোজন কারখানা স্থাপন করেছে যার মধ্যে
উল্লেখযোগ্য বিখ্যাত ব্র্যান্ড হচ্ছে- স্যামসাং, সিম্ফনি, আইটেল, ওয়াল্টন ও
উই। এই কারখানাগুলোতে শত-শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে এবং কয়েক হাজার
লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে যা অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।
বিএমপিআইএ
সভাপতি জানান, ২০১৭-১৮ সালের বাজেটে ঘোষিত সুবিধার কারণে কোম্পানিগুলো
বিশাল বিনিয়োগ করে কারখানা স্থাপন করেছে, সেখানে মাত্র এক বছরের মধ্যে
অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করার কারণে পূর্ণাঙ্গ মোবাইল আমদানির খরচের
চাইতে স্থানীয়ভাবে সংযোজিত মোবাইলের খরচ বেশি পড়বে। এর ফলে কোনভাবেই এই
সংযোজনশিল্প টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না এবং বিনিয়োগকারীরা বিশাল ক্ষতির
সম্মুখীন হবেন। এর ফলে এসব কারখানায় ইতোমধ্যে নিযুক্ত হাজার হাজার শ্রমিক
কর্মীরাও কর্মসংস্থান হারাবে।