রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু ও তাদের আশ্রয়দাতা বাংলাদেশীদের সহায়তায় ৯৫১ মিলিয়ন (৯৫ কোটি ১০ লাখ) ডলার চেয়েছে জাতিসঙ্ঘ। এই অর্থ দিয়ে চলতি বছরের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ মাসে ৯ লাখ রোহিঙ্গা এবং তিন লাখ ৩০ হাজার স্থানীয় বাংলাদেশী জনগোষ্ঠীকে সহায়তা দেয়া হবে।
গতকাল জেনেভায় আয়োজিত এক সম্মেলনে জাতিসঙ্ঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপো গ্রান্ডি, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক উইলিয়াম সুইং ও বাংলাদেশে জাতিসঙ্ঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সিপ্পো যৌথভাবে রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় এ মানবিক সহায়তার আবেদন জানান। সহায়তার এই অর্থে শতাধিক জাতিসঙ্ঘ সংস্থা, দেশী ও বিদেশী এনজিওগুলোর মাধ্যমে মানবিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
সম্মেলনে ফিলিপো গ্রান্ডি বলেন, আমরা রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু ও তাদের উদারভাবে আশ্রয় দেয়া বাংলাদেশী সম্প্রদায়ের প্রকৃত জরুরি চাহিদার কথা বলছি। এই সঙ্কটের সমাধান মিয়ানমারের অভ্যন্তরেই নিহিত। উদ্বাস্তুদের ফিরে যাওয়ার জন্য সেখানে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
অর্থের এই আবেদনের লক্ষ্য হলো ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ উদ্বাস্তুদের জীবন রক্ষাকারী ও জরুরি মানবিক চাহিদা মেটানো, পরিবেশের টেকসই সুরক্ষা ও স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর আস্থা অর্জনে সহায়তা দেয়া। অর্থের ৫৪ শতাংশ খাদ্য, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, আশ্রয় ও অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যয় হবে। শুধু খাদ্য বাবদ ২৫ শতাংশ অর্থের প্রয়োজন হবে।
উইলিয়াম সুইং বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের চাহিদা বিপুল। রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় আগের আবেদনে অনেক সরকারই উদারভাবে সমর্থন দিয়েছে। বহুসংখ্যক উদ্বাস্তুর জরুরি মানবিক চাহিদা মেটাতে অব্যাহত সমর্থন প্রয়োজন।
এর আগে গত সেপ্টেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছয় মাসের জন্য জাতিসঙ্ঘ ৪৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার সহায়তার আবেদন জানিয়েছিল। পেয়েছে ৩২ কোটি ১০ লাখ ডলার, যা মোট চাহিদার ৭৪ শতাংশ।
ইউনিসেফ ১১ কোটি ৩০ লাখ ডলার দেবে : জাতিসঙ্ঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ রোহিঙ্গা ও স্থানীয় বাংলাদেশী জনগোষ্ঠীর জন্য ১১ কোটি ৩০ লাখ ডলার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে জেনেভায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইউনিসেফের মুখাপাত্র বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের নতুন ও গুরুতর ঝুঁকি রয়েছে। অংশীদারদের সাথে নিয়ে আমরা ৪ থেকে ১৪ বছরের রোহিঙ্গা শিশুদের মৌলিক শিক্ষা ও জীবন ধারণের দক্ষতা শিখিয়েছি। তিন লাখ ৫০ হাজার শিশুর জন্য মনোসামাজিক সহায়তা দেয়ার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। ইতোমধ্যে এক লাখ ৪০ হাজার শিশুকে এ ধরনের সহায়তা দেয়া হয়েছে।