শহরের
মাঝে দাঁড়িয়ে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী। তবে
সেই মূর্তির হাত-পা ভাঙতে বসেছে। খসে
পড়ছে চাঙড়।
শুধু
এটি নয়, বিপ্লবীর শহর মেদিনীপুরের অনেক মূর্তিরই এমন জীর্ণ দশা। আগামী
সোমবার শহরে আসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হেলিকপ্টার
থেকে নেমে এই গাঁধী মূর্তির পাশ দিয়েই কলেজ-কলেজিয়েট স্কুলের মাঠের সভাস্থলে পৌঁছনোর কথা তাঁর। তাই
অবিলম্বে শহরের জীর্ণ মনীষীদের মূর্তিগুলোর হাল ফেরানোর আর্জি জানিয়ে জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিচ্ছে বিজেপি। বিজেপির
রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায় মানছেন, “মেদিনীপুরের অনেক মূর্তিই সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে। মূর্তিগুলো
সংস্কার করার জন্য আমরা জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিচ্ছি।’’
মূর্তি
সংস্কারের বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলকে খোঁচা দিতেও ছাড়ছে না বিজেপি। দলের
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক অরূপ দাসের কটাক্ষ, “সৌন্দর্যায়নের নামে শহরে বিশ্ববাংলার লোগো বসছে, অফিসগুলোর রং ঘনঘন নীল-সাদা করা হচ্ছে, কিন্তু মনীষীদের মূর্তি সংস্কার করা হচ্ছে না। প্রশাসন,
পুরসভার এই তো হাল।’’ সব
দিক দেখে মেদিনীপুরে মনীষীদের মূর্তিতে মাল্যদানের কর্মসূচি নিচ্ছে বিজেপি। এই
কর্মসূচি হবে প্রধানমন্ত্রী শহরে পা রাখার আগেই। বিজেপির
রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়, “মেদিনীপুর বিপ্লবীদের ভূমি। এখানে
বিপ্লবীদের মূর্তি রয়েছে। সব
মূর্তিতে মাল্যদান করা হবে। ১৪
এবং ১৫ জুলাই এই কর্মসূচি হবে।”
বিজেপি
সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার কোথায় নামবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে
সভার মাঠে কপ্টার নামার সম্ভাবনা কম। তেমন
হলে পুলিশ লাইন মাঠে হেলিকপ্টার নামতে পারে। সেখান
থেকে গাড়িতে তিনি সভাস্থলে পৌঁছবেন। এই
যাত্রাপথে ক্ষুদিরাম, বিদ্যাসাগর, গাঁধীর মূর্তি রয়েছে। আশেপাশে
আরও মূর্তি রয়েছে। বেশিরভাগেরই
রং চটে গিয়েছে, কয়েকটি ভেঙেও যাচ্ছে। শহরের
এক প্রবীণ নাগরিকের কথায়, “মূর্তিগুলোর কোনওটার মাথা ভাঙতে বসেছে, কোনওটার কপাল ফাটছে, কোনটার গাল থেকে পলেস্তরা খসছে। তাও
কোনও হেলদোল নেই পুরসভা, প্রশাসনের। এতে
তো মনীষীদেরই অসম্মান।’’ মেদিনীপুরের
উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাসের দাবি, “প্রয়োজনে অনেক সময়েই মূর্তি সংস্কার করা হয়।’’ আর
বিজেপি-র আর্জি প্রসঙ্গে মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষের আশ্বাস, “পুরসভার সঙ্গে কথা বলছি। যে
মূর্তিগুলো সংস্কার করা প্রয়োজন করা হবে।”