বাংলাদেশ
সীমান্তবর্তী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে হিউম্যান ইমিউনো ডিফিসিয়েন্সি ভাইরাস (এইচআইভি) ও এইডসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বাড়ছে। সেখানে
১ হাজার ১৬০ জন এইচআইভি ও এইডসে আক্রান্ত। দশমিক
২৩ শতাংশ ব্যক্তির দেহে এইচআইভি পজিটিভ পাওয়া গেছে। রাজ্যে
সন্তানসম্ভবা নারীদের মধ্যেও এইচআইভি সংক্রমণের হার বাড়ছে।
শুধু
ত্রিপুরা নয়, গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতেই মরণব্যাধি এইডস ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এর
জন্য মাদকাসক্তির পাশাপাশি অবাধ ও যথেচ্ছ যৌন সম্পর্ককেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি
এক অনুষ্ঠানে ত্রিপুরার স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মণ জানান, রাজ্যে ৩৭ লাখ মানুষ রয়েছে। এই
রাজ্যে এইচআইভি ও এইডসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ১ হাজার ১৬০। ত্রিপুরায়
নারীদের মধ্যেও এইচআইভি ও এইডসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বাড়ছে জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। মন্ত্রী
জানান, ভারত সরকার ত্রিপুরায় এইডস নিয়ন্ত্রণে বছরে ৯ কোটি ৩০ লাখ রুপি বরাদ্দ করে।
ভারতের
জাতীয় এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, দেশটির ছয়টি রাজ্যে এইচআইভি ও এইডসে আক্রান্ত হওয়ার হার সবচেয়ে বেশি। এর
মধ্যে তিনটি রাজ্যই উত্তর-পূর্ব ভারতে। বাকি
তিনটি দক্ষিণ ভারতে।
এইচআইভি
ও এইডসে আক্রান্ত হওয়ার দিক দিয়ে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থায় রয়েছে মণিপুর রাজ্য। রক্ত
পরীক্ষায় ১ দশমিক ১৫ শতাংশ ব্যক্তির শরীরে এইচআইভি পজিটিভ পাওয়া গেছে। এরপরেই
রয়েছে মিজোরাম। সেখানে
এইডস আক্রান্ত হওয়ার হার দশমিক ৮০ শতাংশ। এরপর
নাগাল্যান্ড (দশমিক ৭৮ শতাংশ), অন্ধ্র প্রদেশ (দশমিক ৭৮ শতাংশ), কর্ণাটক (দশমিক ৫৩ শতাংশ) এবং তামিলনাড়ুর (দশমিক ২৮ শতাংশ) অবস্থান। বাংলাদেশ
সীমান্তবর্তী ত্রিপুরায় দশমিক ২৩ শতাংশ মানুষের দেহে এইচআইভি পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। গত
বছর ১ লাখ ৩৫ হাজার মানুষের রক্ত পরীক্ষা করে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
এইডসের
ছোবলে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি মিজোরামে। মাত্র
১০ লাখ মানুষের বাসভূমি রাজ্যটিতে গত দুই দশকে ১ হাজার ৭৬০ জন এইডসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
এইডস
মোকাবিলায় ভারত সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। ব্যাপক
জনসচেতনতার চেষ্টাও করছে। এরপরও
দিন দিন বেড়েই চলেছে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা।
নাম
প্রকাশে অনিচ্ছুক ত্রিপুরার এক সরকারি আধিকারিক জানান, এর জন্য ট্রাকচালক থেকে শুরু করে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের অবাধ ও যথেচ্ছ যৌনাচারের প্রবণতা দায়ী। শহরের
মধ্যবিত্ত শিক্ষিত ব্যক্তিদের মধ্যেও এই প্রবণতা বাড়ছে। বাড়ছে
আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যাও। মাদক
ব্যবহারকারী বাড়ার কারণেও এই রোগ ছড়াচ্ছে।