ক্ষুদে বিজ্ঞানী সাব্বির খান আবিষ্কার করেছে আধুনিক অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র। তার যন্ত্র তিন ধাপে আগুন নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করবে। যন্ত্রটি মানুষের সাহায্য ছাড়াই যে কোনো ভবনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আগুন নেভাতে সক্ষম। যন্ত্রে কোনো ভবনে আগুন লাগলে প্রথমে ৫০ থেকে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেই জননিরাপত্তার জন্য একটি সুইচ অন হয়ে বৈদ্যুতিক অ্যালার্ম বাজবে এবং বিপদ সঙ্কেতমূলক লাল বাতি জ্বলে উঠবে যাতে ওই ভবনের লোকজন নিরাপদ স্থানে চলে যেতে পারে এবং ভবন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আগুন নেভানোর যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারে।
বাংলাদেশ মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের উদ্যোগে আয়োজিত সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতায় আমানউল্লাহ কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র সাব্বির খান অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র আবিষ্কার করেছে। সে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার লক্ষ্মীপুরা গ্রামের আলমগীর হোসেন খানের ছেলে।
সাব্বির জানায়, ঘণ্টার চিন্তায় দুই দিনে হাজার টাকা খরচে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র আবিষ্কার করি। আর এতে উপজেলা, জেলা পর্যায়ে প্রথম বিভাগীয় পর্যায়ে পুরস্কৃত হই। যন্ত্রটি সম্পূর্ণভাবে তৈরি করে বড় বড় প্রতিষ্ঠান বা ভবনে সংস্থাপন করা হয় তা হলে আগুনের ক্ষতির হাত থেকে ওইসব প্রতিষ্ঠান রক্ষা পাবে। এবং এটি সম্পূর্ণভাবে তৈরি করতে ব্যয় হবে আনুমানিক দেড় লাখ টাকা। যন্ত্রে তিন ধাপে আগুন নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করবে। যন্ত্রটি মানুষের সাহায্য ছাড়াই যে কোনো ভবনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আগুন নেভাতে সক্ষম। যন্ত্রে কোনো ভবনে আগুন লাগলে প্রথমে ৫০ থেকে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেই জননিরাপত্তার জন্য একটি সুইচ অন হয়ে বৈদ্যুতিক অ্যালার্ম বাজবে এবং বিপদ সঙ্কেতমূলক লাল বাতি জ্বলে উঠবে যাতে ওই ভবনের লোকজন নিরাপদস্থানে চলে যেতে পারে এবং ভবন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আগুন নেভানোর যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারে। যদি কর্তৃপক্ষ আগুন নেভাতে ব্যর্থ হয় বা কোন লোক ভবনে না থাকে ভবনের তাপমাত্র বৃদ্ধি পেয়ে ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয় তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে দ্বিতীয় সুইচটি অন হবে। তখন একটি মটারের মাধ্যমে একটি গ্যাস সিলিন্ডারের নির্গমন পথ খুলে যাবে তখন ওই গ্যাস সিলিন্ডার থেকে ডাইব্রোমো ক্লোরো ফ্লোরো মিথেন গ্যাস নির্গত হবে যাতে কোনো মানুষের ক্ষতি ছাড়াই আগুন নিভিয়ে ফেলবে। কারণ, কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস মানুষের শ্বাসরোধ করে সে ক্ষেত্রে ডাইব্রোমো ক্লোরো ফ্লোরো মিথেন গ্যাস মানুষের কোনো রূপ ক্ষতি করে না। অথচ আগুন নেভাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কোনো কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে না এলে ভবনের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছা মাত্রই তৃতীয় সুইচটি অন হবে এবং যার মাধ্যমে ভবনে সংরক্ষিত একটি ফোন থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফায়ার সার্ভিসে কল যাবে এবং ওই ফোনে ভবনের ঠিকানা অপারেট করা থাকবে যখন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ফোনটা রিসিভ করবে তখন তারা ওই ভবনের ঠিকানা ভবনের দুর্ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হওয়ার পরে তাদের পক্ষে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সাহায্য করবে। আর কোনো ভবনে যন্ত্রটি নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি নির্দিষ্ট কন্ট্রোল রুম থাকবে। যেখানে যন্ত্রের মূল অংশ থাকবে এবং সেখান থেকেই মূল ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণ করবে। মূল কন্ট্রোল রুমেই যদি আগুনের সূত্রপাত হয় সে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় একটি পারদ সুইচ অন হবে যার মাধ্যমে একটি সিলিন্ডারে রক্ষিত কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস বেড় হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করবে।
যন্ত্রে ব্যবহারকৃত উপকরণগুলো : পারদনির্মিত বৈদ্যুতিক সুইচ, লাল বাতি, সাউন্ড বঙ্ বা মাইক, মোটর, গ্যাস সিলিন্ডারসহ ডাইব্রোমো ক্লোরো ফ্লোরো মিথেন গ্যাস, ব্যাটারি, তাপ নিরোধক সেলুলয়েড তার, মোবাইল ফোন ইত্যাদি। -হাসান মামুন : জুন , ২০১৪
 
Top