বাংলাদেশের বেনাপোল স্থলবন্দরে শনিবার শেষ রাতে ভয়াবহ আগুনে অন্তত ১০টি পণ্যবাহী ট্রাক ভস্মীভূত হয়েছে। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ ভারতীয় ট্রাক টার্মিনালে আগুন নজরে পড়ার পরে ১০টি দমকলের গাড়ি প্রায় ৫ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়। পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের
সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী ঘটনাস্থল ঘুরে এসে জানিয়েছেন, ক্ষতির পরিমাণ ২৫ কোটি টাকারও বেশি।
ট্রাক পুড়ে যাওয়ার প্রভাব পড়ে এ দেশের পেট্রাপোল বন্দর এলাকায়। সকালে পণ্য আমাদনি-রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। দুপুরের পর অবশ্য তা স্বাভাবিক হয়েছে। ব্যবসায়ী ও ট্রাক মালিকদের দাবি, ভারত থেকে পণ্য নিয়ে যাওয়া ট্রাকের কোনও নিরাপত্তা বেনাপোলে নেই। ট্রাক মালিকদের নেতা দিলীপ দাস জানিয়েছন,
‘‘আমরা শুল্ক দফতরের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছি।’’
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বেনাপোলে পণ্য খালাসে অযথা দেরি করায় পণ্যভর্তি ট্রাক অরক্ষিত অবস্থায় রেখে চলে আসতে হয় চালক ও খালাসিদের। এর আগেও ১৯টি ট্রাক এ ভাবে আগুনে পুড়ে গিয়েছিল। কিন্তু এক পয়সা ক্ষতিপূরণ মেলেনি। এ বার যাতে তা না-হয়, সে জন্য শুল্ক দফতরকে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশের শুল্ক দফতর সূত্রের খবর, প্রসাধন সামগ্রী, জীবাণুনাশক,
কাপড় ও তুলো ছাড়া জ্বলে যাওয়া ট্রাকগুলিতে ঢাকার পাঁচতারা ‘রূপসী বাংলা’ হোটেল নতুন করে সাজিয়ে তোলার জন্য বিভিন্ন দামি পণ্যসামগ্রী
ছিল। বন্দরের পরিচালক নিতাইচন্দ্র
সেন জানিয়েছেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে আগুন লাগার পিছনে দু’টি কারণ পাওয়া যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, একটি ট্রাকে থাকা অ্যাসিড থেকে আগুনের শুরু। আবার অনেকে বলছেন, ট্রাকের তলায় আগুল জ্বেলে রান্না করা হচ্ছিল। তা থেকেই আগুন ছড়িয়েছে।
বাংলাদেশের নৌপরিবহণমন্ত্রী শাহজাহান খান বিকেলে বেনাপোলে এসে খোঁজখবর নেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে। ১০ দিনের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।’’
বেনাপোল সিএনএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান স্বজন জানিয়েছেন,
‘‘মাঝে মাঝেই এই ধরনের অগ্নিকাণ্ড হয়। কিন্তু সরকার আজও বিমার কোনও বন্দোবস্ত করেনি।’’
ক্ষয়ক্ষতি যাচাইয়ে বাংলাদেশের শুল্ক দফতরও একটি কমিটি গড়েছে। পাঁচ দিনের মধ্যে সেই কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।