মেঝেতে কফি পড়লে তিনি লোকলস্কর ডাকেন না। ঝটপট নিজেই মুছে ফেলেন। আর মুহূর্তে তা ক্যামেরাবন্দি হয়ে ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। হওয়ারই কথা। তিনি যে প্রধানমন্ত্রী! নেদারল্যান্ডসের। দেশের মাটিতে সর্বক্ষণ কনভয় কিংবা বুলেটপ্রুফ গাড়ি লাগে না মার্ক রুটের। সাইকেল নিয়েই দিব্যি অফিস-হাট করেন। আর সেই তিনিই যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখের উপর ‘না’ বলে বসেন, ক্ষণিকের জন্য থমকে যায় ওভাল অফিসও।
মার্কিন শুল্ক নীতির জেরে এই মুহূর্তে ঘরে-বাইরে ব্যাপক চাপের মুখে ট্রাম্প। ভারত, কানাডা কিংবা মেক্সিকোর মতো বেজায় খাপ্পা ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ)। এমন বাণিজ্যিক সংঘাতের আবহেই ইইউ-এর প্রতিনিধি হিসেবে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলেন ডাচ প্রধানমন্ত্রী। বোমাটা ফাটল সেখানেই।
ক্রয় করুন http://www.bongshi.org থেকে
কথা হচ্ছিল ওভাল অফিসের নিউজ় কনফারেন্স রুমে। ঘর ভর্তি সাংবাদিক। মিনিট পাঁচেকের যৌথ সাংবাদিক বৈঠক। বেশির ভাগ সময় চুপ করেই শুনছিলেন মার্ক, শুনছিলেন। মাঝে হঠাৎ বেঁকে বসলেন। ট্রাম্প বলেছিলেন, “ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তার সমাধান হলে ভাল, না-হলেও ভাল...।” অমনি ভুরু কুঁচকে, আর মুখে হাসি ঝুলিয়ে রেখে মার্ক সটান বলে বসলেন— ‘‘না, এটা কোনও কাজের কথা নয়।’’
বাধা পেয়ে খানিক হকচকিয়ে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কার্যত ঢোক গিলেই তিনি বলেন, ‘‘আচ্ছা, ঠিক আছে। অন্তত গাড়ি আমদানি নিয়ে তো আমাদের ভাবা উচিত!’’ মার্ক তখনও একবগ্গা। স্পষ্ট জানান— এ সব কোনও ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নয়। ইইউ-এর সমস্যা সমাধান করতেই হবে। এর পরে অবশ্য আর কোনও বাদানুবাদ নয়, পারস্পরিক ধন্যবাদজ্ঞাপনেই শেষ হয়ে যায় বৈঠক।
তিক্ততার রেশটা তবু থেকেই গেল। হোয়াইট হাউস এ নিয়ে কোনও বিবৃতি না-দিলেও, রুটের এই মৌখিক প্রতিবাদকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন কূটনীতিদের একাংশ। এর আগে অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিল আমদানির ক্ষেত্রে আমেরিকার অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোকেও  ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলে বিঁধেছিলেন ডাচ প্রধানমন্ত্রী।
বছর একান্নর মার্ক টানা ৮ বছর ক্ষমতায় রয়েছেন। জোর জল্পনা, ২০১৯-এ তিনি ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্টও হতে পারেন। ওভাল অফিসে ট্রাম্পকে তাই ‘না’ বলাটা যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
 
Top